
ঝিনাইদহে ফের মন্দিরের সেবায়েতকে কুপিয়ে হত্যা
ঢাকা, ০১ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):
এক মাসের কম সময়ের ব্যবধানে ঝিনাইদহের আরেকটি মন্দিরের সেবায়েতকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার ভোরে মন্দিরের ফুল তোলার সময় তিনজন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলে এসে শ্রী শ্রী রাধামদন গোপাল বিগ্রহ মঠ নামের মন্দিরটির সেবায়েত বা সেবক শ্যামানন্দ দাসকে (৫০) কুপিয়ে চলে যায়।
শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সম্প্রতি সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের উপর যে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে এই হামলার মিল রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
৭ জুন এই ঝিনাইদহে আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলি নামের আরেকজন হিন্দু পুরোহিতকে একইভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজগর আলী শেখ জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উত্তর কাষ্ট সাগরা গ্রামে, ঢাকা- খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত মন্দিরটির সামনে ফুল তুলছিলেন আর জপ করছিলেন সেবায়েত শ্যামানন্দ দাস। এ সময় তিনজন দুর্বৃত্ত এসে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যায়।
তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান জানান, শ্যামানন্দ দাস মন্দিরের সেবায়েত হিসাবে এসে কিছুদিন থাকেন, পরে আবার অন্য কোন মন্দিরে চলে যান। এভাবে অনেকদিন ধরেই এই মন্দিরে তার যাতায়াত ছিল। সর্বশেষ বৃহস্পতিবারই তিনি যশোর থেকে এই মন্দিরে আসেন।
গৃহত্যাগী শ্যামানন্দ দাসের পরিবার বা স্বজনদের সম্পর্কে এখনো তথ্য পায়নি পুলিশ।
সম্প্রতি সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের উপর যে হামলাগুলো হয়েছে, তার সঙ্গে এই হামলারও মিল রয়েছে বলে জানান হাফিজুর রহমান।
হামলাকারীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।
নিহত শ্যামানন্দ দাস নড়াইল সদর উপজেলার মুসুরিয়া গ্রামের কিরণ সরকারের ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, শ্যামানন্দ দাস পরিবার ত্যাগ করে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নিয়ে মন্দিরে মন্দিরে পূজা-অর্চনার কাজ করে বেড়াতেন। বছর চারেক আগে তিনি ঝিনাইদহে এসে সদর উপজেলার উত্তর কাস্ট সাগরা গ্রামের শ্রী শ্রী রাধামদন গোপাল মঠ মন্দিরের সেবায়েতের দায়িত্ব নেন। তাকে এলাকার মানুষ বাবাজি বলে ডাকতেন। তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন।
গত কয়েকবছরে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপর একই ভাবে মোটরসাইকেলে করে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা বা আহত করার প্রায় অর্ধশত ঘটনা ঘটেছে।
আল কায়েদার বাংলাদেশ শাখা বা আইএসের নামে ইন্টারনেটে বার্তায় বেশিরভাগ হামলার দায়িত্ব করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ সরকারের দাবি, বাংলাদেশে এসব সংগঠনের কোনো অস্তিত্ব নেই।