
প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হচ্ছে না: খালেদা জিয়া
ঢাকা, ০৭ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রকৃত অপরাধীদের ধরছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ অভিযোগ করেন বিএনপির প্রধান।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, সাঁড়াশি অভিযানের নামে ১৬ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে তিন হাজারের বেশি মানুষ বিএনপির নেতাকর্মী। পবিত্র এই ঈদের দিনটি তাদের জেলে কাটাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারদলীয় দু-একজন অপরাধীকে ধরা হলেও পরে আবার ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘বর্তমানে দেশের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। দেশের মানুষ মোটেই ভালো নেই। আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।দেশের সুশাসন, গণতন্ত্র, আইনের অধিকার না থাকায় নানান ধরণের অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটিত হচ্ছে। যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে সরকার শক্তভাবে মোকাবেলা না করতে পারলে এই ধরণের ঘটনা থেকে সত্যিকার অর্থে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে দাড়াঁবে। এমনকি সরকারের সেই ধরণের কোনো প্রস্তুতি আছে কিনা তাও দেখার বিষয়।’’
সম্প্রতি গুলশানের ক্যাফেতে ঘটে যাওয়া প্রসঙ্গে ঈঙ্গিত করে বিএনপি প্রধান বলেন, ‘‘সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা ও গাফিলতির জন্যই দেশে এই ধরণের ঘটনা ঘটছে। কারণ সরকার কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে পারেন না। যাদের ধরা হয় তারা আবার তাদেরই লোক, তাই কয়েকদিন পর অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে।’’
তিনি বলেন, বিডিআরের ঘটনা থেকেই এধরণের অপরাধের সূত্রপাত শুরু হয়েছে। তখনেই যদি সরকার প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা না দিয়ে শক্ত হাতে দমন করতো তাহলে আজকে বাংলাদেশে এমন অবস্থার সৃষ্টি হতো না।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘সম্প্রতি গুলশানের একটি ক্যাফে রেস্তোরায় যে নাশকতা হয়েছে সেই এলাকাটি কূটনৈতিক জোন হিসেবে পরিচিত। সেখানে অনেক ধরণের নিরাপত্তাবেষ্টনী থাকে। তাই সাধারণ মানুষ না জানলেও সরকার তো জানতো। তাহলে এতো সময়ক্ষেপন করা হলো কেন? কেন ভোর পর্যান্ত অপেক্ষা করতে হলো।’’
তিনি বলেন, পুলিশবাহিনী গ্রেফতার বাণিজ্যি নিয়ে ব্যস্ত। তারা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গুলশানের ঘটনায় পুলিশ, র্যাব ছিলো তারা পারেননি কেন? পরবর্তীতে সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসতে হলো। তাহলে এতো দেরি করা হলো কেন?
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি আবারো বলছি এখন প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। কিন্তু সরকার জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে ব্লেমগেইম করে চলেছে। প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হচ্ছে না।’’
খালেদা জিয়া বলেন, আজকে একদিকে সন্ত্রাসী অন্যদিকে লুটপাট চলছে। তাই প্রকৃত অপরাধীদের শক্তহাতে দমন না করা হলে বরবর্চিত ঘটনার অবসান কঠিন হয়ে যাবে।’’
শুভেচ্ছা বিনিময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আতলাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়জ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুণ অর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরব, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, সিনিয়র সহ সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া পেশাজীবীদের মধ্যে প্রফেসর এমাজ উদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর আফম ইউসুফ হায়দার, প্রফেসর সুকোমল বড়ুয়া, কবি আব্দুল হাই শিকদার, রুহুল আমিন গাজী, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, এম আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইতালি, চীনের রাষ্ট্রদূত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ ২৬টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা এই ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে অংশ নেন।
শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রথমে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং পরবর্তীতে বনানী কবরস্থানে শায়িত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেন খালেদা জিয়া।