রাজনীতি

আইএস নয় খালেদার নেতৃত্বে গুলশানে হামলা: ১৪ দল

ঢাকা, ১১ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):

আইএস নয়, গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় হামলাসহ বিগত দিনের সব হত্যা, নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন ১৪ দলের নেতারা।

সোমবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৪ দলের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সমাবেশে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।

অন্যদিকে জঙ্গিবাদ ইস্যুতে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করতে কর্মসূচি প্রদান করেছে ক্ষমতাসীনরা।

১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এটি সরকারের বিরোধিতা করার সময় না। এটি সরকারের সমালোচনা করার সময় না। এটি সরকারকে সহযোগিতা করার সময়। জঙ্গিবাদকে পরাজিত করতে আপনারা সবাই এগিয়ে আসুন।

নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, “২০ জুলাই ঢাকায় অভিভাবক সমাবেশ হবে। ২১ জুলাই নারী সমাবেশ হবে ঢাকায়।”

“আমরা তাদের বুঝাব, আপনার সন্তানের খবর রাখেন। সে কী করছে, সেদিকে নজর দেন। এরপর রংপুর, পঞ্চগড়, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, কুমিল্লা যাবো আমরা। পাড়া-মহল্লায় যাবো, কমিটি করবো; জঙ্গিবাদের উৎস কোথায় তা খুঁজে বের করবো।”

নাসিম বলেন, “এতদিন অনেকে নিখোঁজ হয়েছে, তখন আপনারা বলেছেন র‌্যাব গুম করেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, তারা আমার বাংলার মানুষকে খুন করছে।”

“খালেদা, আপনি তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতে চান। প্রাক্তন শিবিরকর্মীরা জঙ্গি হয়েছে। এদের সাথে মিলে খালেদা ক্ষমতায় যেতে চায়।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “গুলশানের ঘটনার রাতে খালেদা জিয়া নিজের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া দেশবাসী বা নগরবাসীর নিরাপত্তা চাননি। নিজের কথা ভেবেছেন।”

তিনি আরো বলেন, “সেই রাতে লন্ডনে তারেক রহমানের ফোন সারা রাত ব্যস্ত ছিলো। কোথায় তিনি এতো ব্যস্ত ছিলেন- সে প্রশ্ন দেশবাসীর থেকেই যাবে।”

প্রতিবাদ সমাবেশে গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় হামলার দিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাকিস্তান থেকে টেলিফোন করা হয়েছিলো বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

১৪ দলের সমন্বয়ক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে হানিফ বলেন, “তারেক রহমানের কর্মচারী পরিচয়ে খালেদা জিয়াকে গুলশান হামলার দিন পাকিস্তান ও লন্ডন থেকে টেলিফোন করা হয়- হামলার ঘটনায় খালেদা জিয়া জড়িত এটা কি প্রমাণ করে না?”

সমাবেশে তথ্যমন্ত্রী ও জাসদের (একাংশ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, “বর্তমানে যে ধারাবাহিক আক্রমণ চলছে, তার শুরু কোথায়? এসব ধারাবাহিকভাবে চলে এসেছে। আগুন সন্ত্রাস যারা করেছেন, তারাই একের পর এক ধারাবাহিক আক্রমণ করছেন।”

ইনু বলেন, ‘এসব আক্রমণের সঙ্গে ধর্মের বা ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। এরা ইসলামের ক্ষতি করছে। ৭১ এর পরাজিত শক্তি এরা। এদের ৭১ এও পরাজিত করেছি আমরা, এখনো করবো। আপনারা প্রতিরোধ গড়ে তুলুন, জয় আমাদের হবেই।”

গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর ১৪ দলের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ সমাবেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।

আরো বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হোসেন, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজিদুল হক, বাসদের সমন্বয়ক রেজাউর রশীদ খান, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল বাসেত মজুমদার, সাবেক ৪ দলীয় জোট সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, স্বাচিপের মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ কামাল প্রমুখ।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button