আইন ও আদালত

১১ আসামির খালাস স্থগিতের বিষয়ে শুনানি রোববার

ঢাকা, ১৪ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):

 

গাজীপুরের আওয়ামী লীগ নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ১১ আসামিকে খালাস করে দেয়া হাইকোর্টের রায় স্থগিত সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি রোববার (১৭ জুলাই) অনুষ্ঠিত হবে। ফলে রোববার পর্যন্ত ১১ আসামির খালাসের রায় স্থগিতই থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ শুনানির জন্য এ দিন নির্ধারণ করেন। আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আসামিপক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন।

এর আগে গত ২১ জুন আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ১১ আসামিকে খালাস করে দেয়া হাইকোর্টের রায় ১৪ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

সে অনুযায়ী আজ শুনানির জন্য নির্ধারিত দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আইনজীবীদের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত শুনানির দিন পিছিয়ে রোববার ধার্য করেন।

উল্লেখ্য, গত ২০ জুন হাইকোর্টের রায়ে খালাসপ্রাপ্ত ১১ জনের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। খালাস পাওয়া ১১ আসামিরা হলেন, আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, ফয়সাল (পলাতক), লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির (পলাতক), খোকন (পলাতক), দুলাল মিয়া, রাকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর (পিতা মেহের আলী) ও মনির। এই ১১ জন এর মধ্যে তিন জন আসামি পালাতক যারা মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত।

এর আগে, গত ১৫ জুন আওয়ামী লীগ নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। অপরদিকে ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে : নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু, মাহবুবুর রহমান মাহবুব, শহীদুল ইসলাম শিপু (পলাতক), হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ ও  সোহাগ ওরফে সরু।

মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন : মোহাম্মদ আলী, আনোয়ার হোসেন আনু, জাহাঙ্গীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর (পিতা আবুল কাশেম), রতন মিয়া ওরফে বড় রতন, আবু সালাম ওরফে সালাম ও সৈয়দ আহমেদ হোসেন মজনু, মশিউর রহমান মশু। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস : আমির হোসেন, বড় জাহাঙ্গীর পিতা নূর হোসেন, ফয়সাল, লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির, খোকন ও দুলাল মিয়া। মৃত্যু : ছোট রতন ও আল আমিন মারা যাওয়ায় নিস্পত্তি।

যাবজ্জীবন বহাল : নুরুল আমিন।  যাবজ্জীবন থেকে খালাস : রাকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর (পিতা মেহের আলী) ও মনির।

প্রসঙ্গত, দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টারকে বিএনপি জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ৭ মে দুপুরে একদল সন্ত্রাসী টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। হত্যার ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মতিউর রহমান মতি বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে দ্রুত বিচার আইনে টঙ্গী থানায় মামলা করেন।

ওই মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নুরুদ্দিন ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিচারক প্রধান আসামি নূরুল ইসলাম দীপু ও যুবদল নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুজনকে খালাস দেয়া হয়।

ওই বছরই আসামিরা ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। ২০০৯ সালের নভেম্বরে আপিলের শুনানি শুরু হয়। তিন দিন শুনানির পর আপিলটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। পরে বিচারপতি আবু তারিক ও বিচারপতি মো. আব্দুল হাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানি চলাকালে ২০১০ সালের ৭ জুলাই আপিলটি তৎকালীন প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়। এভাবে কেটে যায় সাত বছর।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button