বিনোদন

লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের ছয় চলচ্চিত্র

ঢাকা, ১৪ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):

 

চলতি বছরে স্বাধীনচেতা বাংলা সিনেমা নির্মাতাদের পাশে দাঁড়িয়ে এরইমধ্যে বাংলাদেশে জনপ্রিয় আর অতি পরিচিত একটি নামে পরিনত হয়েছে বিশ্বের জৌলুসময় চলচ্চিত্র উৎসব ‘লোকার্নো’। আসছে আগস্টে সুদূর সুইজারল্যান্ডে ৬৯তম বারের জন্য বসতে যাচ্ছে ভেনিস, কান আর বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভালের মত দাপুটে ‘লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভাল’। আর এই গৌরবময় ফিল্ম ফেস্টিভালে প্রদর্শীত হবে বাংলাদেশের তিনটি পূর্ণদৈর্ঘ্য আর তিনটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।

আসছে আগস্টের ৩ তারিখ থেকে সুইজারল্যান্ডে বসবে বিশ্বখ্যাত ‘লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভাল’। যে উৎসবকে ঘিরে অন্তত ১৭টি সিনেমার ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে অসংখ্য নামিদামি সিনেমা। শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে লড়বে অস্কারজয়ী নির্মাতা কেন লোচের ‘আই, ডেনিয়েল ব্ল্যাক’ কিংবা কম ম্যাকার্থির বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নির্ভর ‘দ্য গার্ল উইথ অল দ্য গিফটম’-এর মত ছবি। আর এই গৌরবময় চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শীত হবে বাংলাদেশের তিনটি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও তিনটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি।

‘লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভাল’এর আয়োজকরা আসন্ন ফিল্ম ফেস্টিভালে যেসব ছবি প্রদর্শন ও প্রতিযোগিতার জন্য লড়াইয়ে নির্বাচিত হয়েছে সেগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছেন। যেখানে বাংলাদেশেরও মোট ছয়টি ছবি প্রদর্শনীর কথা ঘোষণা করেছেন। পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবির মধ্যে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত ছবি ‘টেলিভিশন’, গেল বছরে নারী নির্মাতা রুবাইয়াৎ হোসেনের পরিচালনায় বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত ছবি ‘আন্ডারকনস্ট্রাকশন’ এবং কামার আহমাদ সাইমনের ‘শুনতে কি পাও’ ছবিগুলো প্রদর্শীত হবে।

এছাড়া স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি হিসেবে আসন্ন ‘লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভাল’-এ প্রদর্শীত হতে যাচ্ছে ‘জালালের গল্প’ নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন পরিচালিত ‘দ্য কনটেইনার’, মাহদি হাসানের ‘আই অ্যাম টাইম’ এবং ইশতিয়াক জিকোর পরিচালনায় ‘৭২০ ডিগ্রীস’ ছবিগুলোও ।

অন্যদিকে, দেশের সিনেমাকে নিয়ে যারা ভাবেন, প্রতিনিয়ত চিন্তা করেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের সিনেমাকে আন্তর্জাতিক মানের করে গর্বের সঙ্গে তুলে ধরতে নিজেদেরকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করছিলেন, সেইসব স্বাধীনচেতা সিনেমা নির্মাতাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ‘লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভাল’-এর প্রজেক্ট ওপেন ডোরস ও ওপেন হাব। চলতি বছরে সেই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী সেরাদের তালিকায় বাংলাদেশ থেকেই স্থান করে নিয়েছেন মোট পাঁচজন! ‘ওপেন ডোরস হাব’-এর চলতি বছরের প্রকল্পে স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই নির্মাতা ইশতিয়াক জিকো (‘সিনেমা, সিটি অ্যান্ড ক্যাটস’ সিনেমার জন্য) এবং ‘ডে আফটার টুমরো’ নামের ডকুফিকশনের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন কামার আহমাদ সাইমন।

এছাড়া ‘ওপেন ডোরস ল্যাব’ প্রজেক্টটির ওয়ার্কশপেও সুযোগ করে নিয়েছেন বাংলাদেশের মেধাবী নির্মাতারা। এরমধ্যে আছেন নির্মাতা ও প্রযোজনা সংস্থা খনা টকিজের রুবাইয়াত হোসেন, মেধাবী নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন(বাতায়ান প্রযোজনা সংস্থা),  কিনো আই ফিল্মের প্রযোজক ও নির্মাতা আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ|

প্রসঙ্গত, ১৯৪৬ সালের ২৩ আগস্ট প্রথমবার লোকার্নোর গ্র্যান্ড হোটেলে বসে লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভালের প্রথম আসর। যেখানে জিয়াকোমো জেনতিলোমো’র ছবি ‘ও সোল মিও’ প্রদর্শনী হয়। প্রথমদিকে প্রদর্শন ও প্রতিযোগিতার জন্য বেশির ভাগ ছবিই জমা হতো আমেরিকা ও ইতালির। প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই ফিল্ম ফেস্টিভালে সেরা ছবির পুরস্কারকে বলা হয় ‘গোল্ডেন লিওপার্ড’। জনপ্রিয়তা আর জৌলুসময়তার দিক থেকে ধীরে ধীরে  লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভাল আজ উচ্চারিত হয় ভেনিস, বার্লিন এবং কান ফিল্ম ফেস্টিভালের সাথে। এই ফিল্ম ফেস্টিভালের ‘ওপেন ডোরস’ প্রজেক্টটির মাধ্যমেই ইরানিয়ান শীর্ষস্থানীয় চলচ্চিত্রকার আব্বাস কিয়ারোস্তামিসহ বহু বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার আবিষ্কার হয়েছেন।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button