
নদী দখল রোধ ও নাব্যতা ফেরাতে চায় সরকার
ঢাকা, ১৪ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):
দখলদারদের দৌরাত্ম্যে দিন দিন অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের অগণিত নদ-নদী। নদী হারাচ্ছে নাব্যতা। হচ্ছে সঙ্কুচিত। এ অবস্থায় নদীর সীমানা পিলার সঠিক স্থানে স্থাপন করতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জরিপ কার্যক্রম এবং ফতুল্লায় খাল দখল করে ভবন নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার।
পাশাপাশি ট্যানারি শিল্প সাভারে দ্রুত স্থানান্তরের লক্ষ্যে টাস্কফোর্সের সদস্যগণ আগামী ৩ আগস্ট সাভারস্থ চামড়া শিল্প নগরী পরিদর্শন করবেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু, তুরাগসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীসমূহের নাব্যতা এবং স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ৩২তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নদী তীরের অবৈধ দখলদারদের আর ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জেল ও জরিমানা করা হবে। যে সমস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানে এ্যাফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) স্থাপন করা হয়নি, সেগুলোতে ইটিপি স্থাপন ও সকল কারখানায় ইটিপি চালু রাখতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
সভায় জানানো হয়, আদি বুড়িগঙ্গা নদীকে বাঁচাতে কমিটির রিপোর্ট হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে। শ্যামপুরে একটি ‘ইকোপার্ক’ নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকার চারপাশে কাঁচপুর, টঙ্গি ও আশুলিয়ায় আরো তিনটি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হবে। নদীতীর রক্ষায় ২০ কিলোমিটার ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারের বর্তমান মেয়াদে আরো ৫০ কিলোমিটার ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ করা হবে।
সভায় আরো জানানো হয়েছে, নদীতীর অবৈধভাবে দখল রোধে ঢাকার চারপাশে ৪০৬৩টি এবং নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যার তীরে ৫০১১টি ‘সীমানা চিহ্নিতকরণ পিলার’ স্থাপন করা হয়েছে। পাবনা জেলার চাটমোহরে বড়াল নদীর মথুরা-দোহারপাড়ায় নির্মিত আড়াআড়ি বাঁধটি সম্পূর্ণরূপে অপসারণ করার ফলে বড়াল নদীর সাথে চলনবিলের আংশিক সংযোগ স্থাপন হয়েছে। অন্যান্য বাঁধ অপসারণের কাজ চলমান রয়েছে।
এছাড়া সাভারে চামড়া শিল্প নগরীর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ১০২টি ট্যানারি শিল্পের মালিক গ্যাসের জন্য আবেদন করেছে। ১৩৭টি ট্যানারিতে পানির মিটারের পিট এবং ৩০টিতে ওয়েট-ব্লু মেশিন স্থাপন করা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সংসদ সদস্য বেগম সানজিদা খানম, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সংশ্লিষ্ট সংস্থা প্রধান ও জেলা প্রশাসকগণ উপস্থিত ছিলেন।