
ময়মনসিংহের ২ আসনে ‘ঢিলেঢালা’ ভোটগ্রহণ চলছে
ঢাকা, ১৮ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):
ময়মনসিংহ-১ এবং ময়মনসিংহ-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিরতিহীনভাবে এ ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকির ও প্রমোদ মানকিনের মৃত্যুতে এ দুই আসনে উপ-নির্বাচন হচ্ছে।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান বাংলামেইলকে বলেন, ‘ময়মনসিংহ-১ ও ৩ এর উপ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব প্রস্তুতি নিয়েছে কমিশন।’
আগেই উপনির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ (সোমবার) সকাল ৮টা থেকেই ভোট উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক মাঠ পর্যায়ে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে।
সকাল থেকেই প্রতিটি কেন্দ্র ফাঁকা। ভোটারদের স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতি নেই বললেই চলে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দেড় ঘন্টায় গৌরীপদুর উপজেলার কলতাপাড়া ও তাঁতকুড়া সরকারি প্রাতমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র হাতে গোনা কয়েকজনকে ভোট দিতে দেখা গেছে।
গতকালই ইসির উপ-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান বাংলামেইলকে বলেন, ‘উপনির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১৬ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত মাঠে থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।’
সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২৪ জন করে নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। এর বাইরে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ১২৩টি টিম, বিজিবির ৭ প্লাটুন সদস্য রয়েছে দুই আসনে।
এর আগে এ দুই আসনের উপ-নির্বাচন উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি খুব সংবেদনশীল। তাই নির্বাচনে পরিস্থিতি খারাপের শঙ্কা থাকলেই কমিশনকে দ্রুত অবহিত করে আইন শৃংঙ্খলাবাহিনীকে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসারসহ ৭ হাজার ৮২৬ জন সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৮ থেকে ১০ জন পুলিশ, ১৪ জন আনসারসহ ২২ জন নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া আইনমৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ৯২টি মোবাইল টিম (প্রতি টিমে ৭ জন করে), পৌরসভা ও প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য পুলিশের একটি ষ্ট্রাইকিং ফোর্স, ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে ৬টি ভ্রাম্যমাণ টিম, ২২০ জন বিজিবি সদস্য এবং র্যাব টহলে রয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের আগের দিন ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা রোধে মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ময়মনসিংহের দুই আসনে মোট ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।’
হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনের নির্বাচনে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিনের পুত্র জুয়েল আরেং (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা খাতুন (আপেল) ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এডভোকেট সোহরাব উদ্দিন (লাঙ্গল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মামলা জটিলতার কারনে জাপা প্রার্থী সোহরাব উদ্দিনের মনোনয়ন বাতিল হলে আপিলের পর গত শুক্রবার তার প্রার্থিতা ফিরে পান। ফলে এই অল্প সময়ে তিনি মাঠে নামতে পারেননি।
এদিকে ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে টানা তিনবার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব) মজিবুর রহমান ফকিরের মৃত্যুতে শূন্য এ আসনের উপ-নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করলেও নির্বাচনী উত্তাপ খুব একটা নেই। সাদামাটা এ আসনের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নাজিম উদ্দিন আহমেদ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী হাফেজ মো. আজিজুল হক (মটর গাড়ী), ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবু তাহের খান (মিনার), ন্যাপের আব্দুল মতিন মাস্টার (কুড়ে ঘর) ও জাতীয় পার্টির মো. শামসুজ্জামান জামাল (লাঙ্গল)।
ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৯৪। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৮১ হাজার ৬২২ ও মহিলা ভোটার এক লাখ ৮১ হাজার ৭২। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৩টি। ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ২৬ হাজার ২৩৫। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ১৩ হাজার ৮৯২ ও মহিলা ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৩৪৩। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৮৭টি।