
জামালপুরের রাজাকারদের সাজায় সন্তুষ্ট প্রসিকিউশন
ঢাকা, ১৮ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামালপুরের তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রসিকিউটর ড. তুরিন আফরোজ।
সোমবার বিচারপতি আনোয়ারুল হক নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল জামালপুরের আট রাজাকারের রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন তিনি।
তুরিন আফরোজ বলেন, আজকের এ রায়ে নিঃসন্দেহে অত্যন্ত খুশি। কারণ এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের কনভিকশন রেট শতভাগ। আজকের রায়েও ব্যতিক্রম ঘটেনি।
তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা পাঁচ অভিযোগের মধ্যে তিনটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের একটি অভিযোগে মো. আশরাফ হোসেন, মো. আব্দুল মান্নান ও মো. আব্দুল বারীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক ওরফে বদর ভাই, এস এম ইউসুফ আলী, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা শরীফ আহাম্মেদ ওরফে শরীফ হোসেন, হারুন ও মো. আবুল হাশেমের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগসহ একাধিক অভিযোগ প্রমাণিত।
বাকিদের পলাতক দেখিয়েই এ মামলার বিচার চলে। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে তাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। দণ্ডিত পলাতকদের মধ্যে যারা দেশের বাইরে রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আদালত পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) মাধ্যমে ইন্টারপোলের নোটিশ জারির নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান তুরিন আফরোজ।
প্রায় ৪৫ বছর আগে সংঘটিত এসব মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করে অভিযোগ গঠনের কাজকে দুরূহ বলে বর্ণনা করে তিনি বলেন, আমাদেরও সীমাবদ্ধতা ছিল। আমাদের সীমাবদ্ধতার জায়গাটি কোথায় সেটা সবাই জানেন।
আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সোমবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিট থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ২৮৯ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রায়ে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা পাঁচ অভিযোগের মধ্যে তিনটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে প্রমাণিত ২ নম্বর অভিযোগে আসামি মো. আশরাফ হোসেন, মো. আব্দুল মান্নান, মো. আব্দুল বারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
পলাতকদের ব্যাপারে ট্রাইব্যুলাল বলেছেন, এদের গ্রেফতারে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহায়তা নিতে পারে সরকার। রায়ে আমৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শামছুল হক ও ইউসুফ আলীর আইনজীবী গাজী এইচ তামিম পূর্ণাঙ্গ কপি পেয়ে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন।
আজ রায় ঘোষণার সময় অ্যাডভোকেট শামসুল হক ও এস এম ইউসুফ আলী ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। সোমবার সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে ট্রাইব্যুনালে আনা হয় তাকে। রায় ঘোষণা শুরুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তাদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়।