
কাঁঠালের বিচির পুষ্টিগুণ
ঢাকা, ১৯ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):
মধুমাস শেষ হতে চলল। মধু মাসের অন্যতম একটি ফলের নাম কাঁঠাল। সুস্বাদু পুষ্টিকর কাঁঠাল আমরা অনেকেই খেয়েছি, তবে কাঁঠালের বিচিগুলো রয়ে গেছে আমাদের কাছে। কেননা মাছ মাংসসহ অনেক তরকারিতে কাঁঠালের বিচির ব্যবহার খাবারের স্বাদের মাত্রাটি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। কাঁঠালের বিচি সেদ্ধ করার পর ব্লেন্ড করে হালকা টক দিয়ে ডালের মতো করে রান্না করা রেসিপিটি খুবই সমাদৃত। অনেকে কাঁঠালের বিচি ভেজে খান আবার অনেকে সেদ্ধ করে পেঁয়াজ মরিচ মাখিয়ে ভর্তা করেও খান। যে যেভাবেই খান না কেন এর রয়েছে বিশাল পুষ্টিগুণ।
কাঁঠালের কোষের যেমন চমৎকার স্বাদ আছে, এর বিচিগুলোরও তেমনি অসীম গুণ আছে। সত্যি বলতে, অধিকাংশ বিচিই আমাদের শরীরের জন্য যারপরনাই উপকারী। তবে কাঁঠাল বিচির আলাদা একটা কদর আছে আমাদের কাছে। এটি যে শরীরের জন্য কত উপকারী সে সম্পর্কে অবগত নই আমরা। প্রতি ১০০ গ্রাম বিচিতে পাওয়া যায় প্রায় ১৩৫ কিলো ক্যালরি। এটি কমপ্লেক্স কার্বো হাইড্রেটের একটি দারুণ উৎস। এছাড়া ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন এ, সি এবং কয়েক প্রকার ভিটামিন বি পাওয়া যায় কাঁঠাল বিচির মধ্যে। এর বাইরেও এটি আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক এবং ফসফরাসও যোগান দিতে পারে। এতে আরও আছে লিগনান্স, আইসোফ্লেভোনস এবং স্যাফোনিন্স। এদেরকে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট বলা হয়ে থাকে। এগুলোর স্বাস্থ্যগত উপকারিতা অনেক। এদের আছে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা। এছাড়া দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষাকারী শক্তি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারে এসব উপাদান। এগুলো আবার এন্টি অক্সিডেন্ট। ফলে শরীরের অনেক জটিল রোগের উপকারও করতে পারে কাঁঠালের বীজের মধ্যে প্রাপ্ত উপাদানগুলো। পুষ্টিবিদরা গবেষণায় দেখিয়েছেন, কয়েক রকমের আলসারের বিরুদ্ধেও জোর লড়াই করার মতো শক্তি আছে কাঁঠাল বিচির। এছাড়া এটি শরীরের ম্যাজমেজে ভাব এবং হজমের গোলমাল তাড়াতে দারুণ ওস্তাদ। কাঁঠালের বিচি তরকারির মধ্যে আলুর বিকল্প হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়।
এটি ভিষণ সুস্বাদু বলে গ্রামঞ্চলে এর অসীম কদর। এটি মাছ, সবজি এমনকি মাংসের সঙ্গেও রান্না করে খাওয়া যায়। আর শুকনা কড়াইতে কাঁঠালের বিচি আধা পোড়া করে ভাজি করে কিংবা কাঠখড়ের আগুনে পুড়িয়ে খেলে তা একই সঙ্গে রসনা বিলাসের কাজও করে আবার শরীরের উপকারও করে। এছাড়া কাঁঠালের বিচি দিয়ে বেশ কয়েক রকমের মজাদার আইটেমও রান্না করা যায়। সুতরাং কাঁঠাল খাওয়ার পর বিচিগুলো ময়লার বালতির মধ্যে নিক্ষেপ না করাই ভালো। কাঁঠালের সঙ্গে বোনাস হিসেবে যে এত উপকারী বিচিগুলো সঙ্গে আসছে তার সদ্ব্যবহার করাই উচিত।