জাতীয়

মসৃণ ফোরলেনজুড়ে থাকবে ‘বাস-বে’

ঢাকা, ২০ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাশে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে রংপুরের বুড়িমারী পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার সড়ক ফোরলেনে উন্নীত করা হবে। দেশের উত্তরাঞ্চলের ১০টি জেলার যানবাহন চলাচলে এ মহাসড়কটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। একই সঙ্গে মহাসড়কের এ ‍অংশ ব্যবহার করে পরবর্তীতে বাংলাবান্ধা দিয়ে ভারত, নেপাল এবং বুড়িমারি দিয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে উপ-আঞ্চলিক সড়ক সংযোগ সহজতর করা হবে।

দেশের অন্যান্য ফোরলেনের চেয়ে এটি হবে আরও আধুনিক। মসৃণ মহাসড়কজুড়ে ছয় থেকে আট কিলোমিটার পর পর বিদেশের আদলে ১২২টি আধুনিক ‘বাস-বে’ নির্মাণ করা হবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ জানায়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালের কাছে ‘বাস-বে’গুলো নির্মাণ করা হবে। যেন এসব এলাকায় কোনো ধরনের জটলা তৈরি না হয়। সড়কের যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠা-নামার কারণে একদিকে বাড়ছে দুর্ঘটনা, অন্যদিকে তৈরি হচ্ছে যানজট। তাই বাসে যাত্রী ওঠা-নামায় স্বস্তি আনতেই ফোরলেন মহাসড়কজুড়ে ‘বাস-বে’ নির্মাণ করা হবে।

মূলত সড়কের পাশেই স্বল্প পরিসরে প্রশস্ত সড়ক থাকবে। ফলে প্রধান সড়কের ওপরে বাস থামিয়ে আর যাত্রী নামানো বা ওঠানোর চিত্র দেখা যাবে না। এখানে বাস থামবে, কিন্তু প্রধান সড়কে কোনো জটলা থাকবে না। সড়কের পাশের জটলার ওপর নির্ভর করেই বাস-বেগুলোর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ নির্ণয় করা হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্য থেকেই বাস-বে নির্মাণের ব্যয় মেটানো হবে। কিছু কিছু স্থানে বাস-বে পাশেই থাকবে যাত্রী ছাউনি। এখানে চালক ও যাত্রীরা বিশ্রাম নিতে পারবেন। যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা থাকবে। কিছু কিছু স্থানে যাত্রী ছাউনি ও টয়লেট সুবিধা থাকছে, যেখানে যাত্রীরা বিশ্রাম নিতে পারবেন।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ১২২টি বাস-বে নির্মাণের প্রস্তাব দেয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। তবে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিদেশেও ১৯০ কিলোমিটারে ১২২টি বাস-বে নেই। এ সড়কে ৮০টি বাস-বে নির্মাণ করলেই যথেষ্ট’।

বাস-বে নির্মাণের সংখ্যা নির্ধারণের কারণেই মূলত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাস হচ্ছে না ‘সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল-রংপুরের বুড়িমারী সাসেক সংযোগ সড়ক-২’ প্রকল্পটি।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ জানায়, অন্য ফোরলেনগুলোর চেয়ে এটি হবে আধুনিক। বিদেশের মতোই আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা থাকবে ফোরলেনে। প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান সড়কের দুই পাশে ধীরগতির যানবাহন লেনসহ ছয়লেনে প্রশস্ত করা হবে। এর পাশাপাশি ২ হাজার ৬৩৫ মিটারের তিনটি ফ্লাইওভার, ৪১১ মিটারের একটি রেলওয়ে ওভারপাস, ৩২টি ব্রিজ, ১৬১টি কালভার্ট, ১১টি পথচারী ওভারপাস, ৩৯টি আন্ডারপাস এবং একটি ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ৮ হাজার ১৭৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা। বাকি অর্থ প্রকল্প সাহায্য থেকে মেটানো হবে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল নাগাদ।
সড়ক ও জনপথ  অধিদফতরের  অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আলী মাসুদ হায়দার

বলেন, ‘পুরো ফোরলেনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারের কাছেই নির্মিত হবে বাস-বে। বাসগুলো নিরাপদেই দাঁড়াতে পারবে। অন্য কোনো ফোরলেনের পাশে বাস-বে নেই। তবে যমুনা সেতুর উভয়পাশে বাস-বে রয়েছে। এ আদলেই মহাসড়কজুড়ে নির্মিত হবে বাস-বেগুলো’।

‘দেশের ফোরলেনজুড়ে বাস-বে নির্মাণ এবারই প্রথম। সড়কজুড়ে এ ব্যবস্থা থাকলে মহাসড়কে জটলা থাকবে না। কারণ, বাসগুলো সড়কের মাঝখানে না থেমেই বাস-বে থেকে যাত্রী নামাতে বা ওঠাতে পারবে’।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button