
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ফাঁকা, সব বন্দি কেরানীগঞ্জে
ঢাকা, ৩০ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):
দুই শ বছরের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সাড়ে ছয় হাজার বন্দির সবাইকে নেওয়া হলো নতুন চালু হওয়া কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর কারাগারে। শুক্রবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে সর্বশেষ ছয়টি প্রিজন ভ্যানে ১৮৪ জন কয়েদিকে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে ঘটনাবহুল নাজিমউদ্দিন রোডের এই কারাগারের ইতি টানা হলো। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, সারা দিনে ৬ হাজার ৫১১ জন কারাবন্দিকে নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হলো। ১৭৮৮ সালে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে আসামি ও বন্দিদের সংশোধনের জন্য নির্মিত হয়েছিল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। তবে এ পুরাতন কারাগারের প্রতিটি পরতে পরতে মিশে আছে ঐতিহাসিক কতশত ঘটনা আর স্মৃতি।
ঐতিহাসিক এসব ঘটনার সাক্ষী হিসেবে থেকে যাচ্ছে পুরান ঢাকার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। পুরাতন কারাগার থেকে বন্দিদের স্থানান্তর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে নবনির্মিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল এ কারাগারটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে বন্দিদের স্থানান্তর করতে অনেকটাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে কারা কর্তৃপক্ষ। পুরাতন কারাগারে ধারণক্ষমতার থেকে প্রায় তিনগুণ বেশি বন্দি রাখতে অনেকটা অসুবিধা হচ্ছিল। তাই আন্তর্জাতিক মানের স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করেই নির্মাণ করা হয় সাড়ে ৬ হাজার বন্দি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন কেরানীগঞ্জের এ নতুন কারাগারটি।
কারা অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, পুরনো এ কারাগারটির সিংহভাগ জমি নিয়ে তৈরি করা হবে কারা কল্যাণ ভবন। এ ভবনে থাকবে সুইমিংপুল, ব্যায়ামাগার, বহুতল পার্কিং, আধুনিক শপিং কমপ্লেক্স ও সিনেপ্লেক্স। ভবনের বাইরে থাকবে সবুজ উদ্যান। বাকি জমির একাংশ নিয়ে তৈরি হবে একটি আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার। কারাগারের সঙ্গে থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের পাশে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হবে। অবশিষ্ট স্থানের একটি অংশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি স্মৃতি জাদুঘর এবং জাতীয় চার নেতার স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এই কারাগারের তিনটি কক্ষে বন্দি করে রাখা হয়েছিল জাতীয় চার নেতাকে। সেখানেই তাদের হত্যা করা হয়। সেই সেলকে ঘিরেই মূলত ৪ নেতার জাদুঘরটি তৈরি করা হবে। এর পাশাপাশি একটি কারা স্মৃতি জাদুঘরও নির্মাণ করা হবে। সেখানে থাকবে কারাগারের সকল ইতিহাস। এদিকে, অবশিষ্ট জমিতে নির্মাণ করা হবে একটি কারা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট।