
হিন্দিতে সাক্ষাৎকার দিয়ে বিতর্কে ইউল্যাব শিক্ষার্থীরা
ঢাকা, ৩১ জুলাই, (ডেইলি টাইমস ২৪):
হিন্দিতে সাক্ষাৎকার দিয়ে এবার সমালোচনার মুখে পড়েছেন রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীরা। বিবিসি হিন্দি সার্ভিসের সঙ্গে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
কয়েকদিন আগে ভারতীয় একটি টিভি চ্যানেলকে হিন্দিতে সাক্ষাৎকার দিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ওই সমালোচনার মধ্যেই আবারো একই ধরণের ঘটনা ঘটল।
সম্প্রতি বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতায় বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নাম সামনে আসার প্রেক্ষাপটে বিবিসি হিন্দি বিভাগের সাংবাদিক নিতিন শ্রীবাস্তব ফেসবুক লাইভে ওই সাক্ষাৎকার নেন। ইউল্যাবের ‘ক্যাম্পাস বি’তে এ সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয় গতকাল শনিবার।
সাক্ষাৎকারটি বিবিসি হিন্দির অফিশিয়াল ফেসবুকে সম্প্রচার হওয়ার পরপরই বিদেশি গণমাধ্যমে বাংলা বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যোগাযোগের ভাষা ইংরেজি ব্যাবহার না করে ছাত্রছাত্রীরা কেন হিন্দি ব্যাবহার করল, তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচনা এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনেক শিক্ষকের পক্ষ থেকেও। ইউল্যাবের মিডিয়া স্টাডিজ এন্ড জার্নালিজম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো: আসিউজ্জামান এ সাক্ষাৎকারের প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অবশেষে সাক্ষাৎকারটি দেখলাম এবং আমাদের প্রতিবেশি দেশের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে ধারণা পেলাম।’
বিবিসি হিন্দি বিভাগের ওই ভিডিওর নিচে বহু বাংলাদেশি ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন। যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ মিশু এটিকে ‘লজ্জাজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সামছুল আরেফিন মজুমদার নামে একজন লিখেছেন, ‘আপনারা হিন্দিতে কেন কথা বললেন? বাংলা বা ইংরেজিতে নয় কেন? কিংবা ওই সাংবাদিককে বাংলা বা ইংরেজি বলার জন্য অনুরোধ করলেন না কেন আপনারা?’
সাক্ষাৎকারটির বিভিন্ন বিষয় দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন ইউল্যাবের সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুবাশার হাসান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউল্যাবের সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষার্থী জানান, কিছুদিন আগে মুবাশার হাসান ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে সাক্ষাৎকারের বিষয়টি জানান। ইংরেজিতে যারা ভালো কথা বলতে পারে, তাদেরকে তার সাথে যোগাযোগ করার আহবানও জানান তিনি। কিন্তু সাক্ষাৎকার নেওয়া হলো হিন্দিতে।
সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হওয়ার পর ওঠা বিতর্কের প্রেক্ষিতে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মুবাশার হাসান। যদিও পরে ওই স্ট্যাটাসটি মুছে দেন তিনি। তবে প্রিয়.কম তার ওই স্ট্যাটাসের একটি স্ক্রিনশট পেয়েছে। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের হিন্দিতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার বিষয়ে তিনি লিখেছেন, ‘রিপোর্টারের অনুরোধেই ছাত্রছাত্রীরা হিন্দিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছে, যাতে ভারতের সাধারণ মানুষ সহজেই তাদের কথা বুঝতে পারে।’
যদিও ভিনদেশি ভাষা নিজস্ব ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করার রীতি সাংবাদিকতায় একটি বহুল প্রচলিত রীতি। বিষয়টি নিয়ে নিতিন শ্রীবাস্তবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রিয়.কমকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনুমতি নিয়েই সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছে।’