অর্থ ও বাণিজ্য

২০১৬ সালকে সার্ভিস ইয়ার ঘোষণা করল ওয়ালটন

ঢাকা, ০২ আগস্ট, (ডেইলি টাইমস ২৪):

উচ্চমানের পণ্য বিক্রির পাশাপাশি বিক্রয়োত্তর সেবা দিয়ে গ্রাহকদের মন জয় করতে চায় ওয়ালটন। ২০১৬ সালকে তারা ‘সার্ভিস ইয়ার’ বা ‘সেবা বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবার চ্যালেঞ্জ নিয়ে ওয়ালটন শুরু করেছিল নতুন বছর। বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের কাছে থেকে অভাবিত ইতিবাচক সাড়া পাওয়ায় সম্প্রতি এ বছরকে তারা সার্ভিস ইয়ার ঘোষণা করে। ওয়ালটন সূত্র জানায়, শুধু উচ্চ মানের পণ্য নয়, সর্বোচ্চমানের বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে ওয়ালটন। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি কিছু গুরুত্বপুর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। মুদ্দা কথা, গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে কতটা গ্রাহকবান্ধব হওয়া যায় তার দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চায় ওয়ালটন। সেবার মান কীভাবে আরো বাড়ানো যায় সে বিষয়ে গ্রাহকদের পরামর্শ চেয়েছে সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, আফটার সেলস সার্ভিস বিষয়ে দুটি ইমেইল আইডি ডেডিকেট করেছে ওয়ালটন। এর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে পরামর্শ ও ধারণা নেওয়া হচ্ছে। আইডি দুটি হচ্ছে- Ôsupport@waltonbd.com’ এবং `info@waltonbd.com’ . কর্তৃপক্ষ বলছে, যারা পরামর্শ এবং আইডিয়া দিয়ে সাহায্য করবেন, ওয়ালটন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। পরামর্শ দিয়ে ওয়ালটন তথা দেশকে প্রযুক্তিখাতে আরো এগিয়ে নিতে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের প্রধান ও ওয়ালটন গ্রুপের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ নিয়ামুল হক জানান, চলতি বছরের শুরু থেকেই আফটার সেলস সার্ভিসে ব্যাপক উন্নতি করেছেন তারা। সকল প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিনের কাজ দিনেই শেষ করতে। এজন্য তাদের প্রনোদনা ভাতা দেওয়া হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় লোকবল বাড়ানো হয়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। আরো লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ মানের বিক্রয়োত্তর সেবার চ্যালেঞ্জ নিয়েছি আমরা। ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও হোম এ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের ক্ষেত্রে ওয়ালটন কতটা গ্রাহকবান্ধব হয়ে উঠতে পারে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। গত ছয় মাসে সফল হয়েছি। আশা করি চলতি বছরেই বিক্রয়োত্তর সেবার ক্ষেত্রে একটা রোল মডেল হয়ে দাঁড়াবে ওয়ালটন।’   তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে ভালো বিক্রয়োত্তর সেবা পেতে গ্রাহকদের ভরসার জায়গা হয়ে উঠছে ওয়ালটন। ফ্রিজ, টিভি, এসি, মোবাইল ফোন সেট, হোম এ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি পণ্যের সার্ভিসিংয়ে বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটন গ্রুপেরই রয়েছে আইএসও সনদ (আইএসও ৯০০১:২০০৮)। বিশ্বমানের মেশিনারিজ ও উচ্চ শিক্ষিত প্রকৌশলী এবং টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে বিক্রয়োত্তর সেবা দিয়ে ওয়ালটন অর্জন করেছে এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। গত বছর প্রায় ১৬০০ প্রকৌশলী ও টেকনিশয়ান কাজ করতো সার্ভিস সেন্টারে। বর্তমানে সেখানে কাজ করছেন দুই হাজার চারশরও বেশি প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান। নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং ইনসেনটিভ প্রদানের ফলে বেড়েছে তাদের কর্মদক্ষতা। গ্রাহকদের হাতের নাগালে দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিতে প্রায় ৪৩টি জেলা শহরে ৬২ পূর্নাঙ্গ সার্ভিস সেন্টার চালু রয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ২৮৪ টি প্লাজাতেও আছে বিক্রয়োত্তর সেবার ব্যবস্থা। শিগগীরই চালু হচ্ছে আরো ৯টি সার্ভিস সেন্টার। আরো নতুন নতুন সার্ভিস সেন্টার ও পয়েন্ট চালুর প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ওয়ালটনের গ্রাহকরা বর্তমানে যে কোন সময় কল সেন্টারে ফোন করে (হটলাইন নম্বর ১৬২৬৭) ৩৬৫ দিনই পাচ্ছেন কাঙ্খিত সেবা। কল সেন্টার প্রতিনিধিগণ গ্রাহকের কথা শুনে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। কল সেন্টারে আসা সমস্যাগুলো নিষ্পত্তি এবং সেবার মান নিয়মিত পর্যবক্ষেণ করছে মনিটরিং টিম। যে কোন সোর্স থেকে তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে বাড়ি বাড়ি গিয়েও সার্ভিস দিচ্ছে ওয়ালটন। এই সেবা এরই মধ্যে গ্রাহকমহলে ব্যাপক প্রসংশিত। এছাড়া টেলিফোনেও পণ্য সম্পর্কে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়।  খুব শিগগীরই বিক্রয়োত্তর সেবায় নতুনত্ব নিয়ে আসছে ওয়ালটন। আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর এই সেবা হবে অনলাইন ভিত্তিক। গ্রাহক ঘরে বসেই জানতে পারবেন তার পণ্যের বর্তমান অবস্থা। সেবা পেতে কত সময় লাগবে, পণ্যটি এখন কোন পর্যায়ে আছে, কখন ডেরিভারি ইত্যাদি বিষয় জানা যাবে অনলাইনেই। উল্লেখ্য, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের সমন্বয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, লেটেস্ট যন্ত্রপাতি ও সম্পূর্ণ ব্র্যান্ড নিউ স্পেয়ার পার্টস দিয়ে দ্রুত ও নিখুঁত বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হচ্ছে। যে সকল অঞ্চলে এখনো সার্ভিস পয়েন্ট গড়ে উঠেনি, সেখানে ভ্রাম্যমাণ সার্ভিস সেন্টার চালু রয়েছে। একটি গাড়িতে বসানো ভ্রাম্যমাণ সেন্টারটি খুচরা যন্ত্রাংশ, প্রকৌশলী, টেকনিশিয়ানসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে সাজানো হয়েছে। জানা গেছে, দেশ-বিদেশে উত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়ার জন্য শ’খানেক বিএসসি ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর সমন্বয়ে একটি দক্ষ টিম গঠিত হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণ চলছে। এ বছর ৩০০ কারিগরী শিক্ষার্থীকে ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেওয়া হবে। এছাড়া অদক্ষদের ৬ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ টেকনিশিয়ান এ পরিণত করার কার্যক্রমও রয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যবহারিক কোর্সের জন্য ওয়ালটন সার্ভিস সেন্টারের সহায়তা নিয়ে নিচ্ছেন।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button