
রাজপ্রাসাদ নাকি স্টেশন? রাশিয়ার রেল স্টেশন দেখলে অবাক হবেন যে কেউ
ঢাকা, ০৩ আগস্ট, (ডেইলি টাইমস ২৪):
রাশিয়ায় মেট্রো রেলের স্টেশনগুলোতে প্রবেশ করলে যে কোনো মানুষই বিভ্রান্ত হবেন। কারণ স্টেশনগুলোর সাজসজ্জা দেখে বহু মানুষেরই মাথা ঘুরে যেতে পারে। এগুলোর সাজসজ্জা অনেক রাজপ্রাসাদকেও হার মানায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ওইয়ার্ড। যে কোনো মানুষকে রাশিয়ার মেট্রো স্টেশন ও রাজপ্রাসাদের ছবি পাশাপাশি দিলে তার পক্ষে নির্ণয় করা কঠিন হবে যে কোনটি স্টেশন আর কোনটি রাজপ্রাসাদ। কারণ, রাশিয়ার স্টেশনগুলোও রাজপ্রাসাদের মতো করে সজ্জিত। এগুলোর উঁচু ছাদ, সোনালি রঙের দারুণ কারুকাজ ও নানা মূল্যবান শিল্পকর্ম বিশ্বের অন্য যে কোনো স্টেশন থেকে আলাদা।
ফটোগ্রাফার ডেভিড বার্ডেনি রাশিয়ান ইন্টেরিয়রের নানা বিষয়ের ওপর ছবি তুলছেন। রাশিয়ার মেট্রো স্টেশনগুলো তাকে খুবই আকৃষ্ট করে। তিনি তিন বছর আগে একটি প্রকল্পের কাজে ইউরোপের নানা রাজপ্রাসাদের ছবি তোলেন। এরপর একদিন তিনি রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ ও মস্কোর মেট্রো স্টেশনের ছবি দেখেন। এরপর সে স্থানগুলোর ছবি তুলতে তিনি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
তিনি বলেন, ‘একটি রাজপ্রাসাদ কোনো বাড়ি নয়, তার চেয়েও বেশি কিছু। একইভাবে মেট্রো স্টেশনও শুধুমাত্র কোনো ট্রেন ধরার কিংবা বদলাবার স্থান নয়, এটি তার চেয়েও বেশি কিছু।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্টেশন হওয়া উচিত একটি আরামদায়ক ও উচ্চমাত্রার স্থান যা বিশ্বের যে কোনো স্থান থেকে আলাদা।’
১৯৩৩ সালে মস্কো মেট্রো নির্মাণ শুরু হয়। এ কাজ করা হয় প্রধানত হাতে ধরা সাধারণ যন্ত্রপাতি দিয়ে। খনি শ্রমিকেরা হাতুড়ি ও শাবল দিলে এ স্থানগুলো গর্ত করে শুরু করেন কাজ। এরপর অবশ্য নানা প্রক্রিয়ায় নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হয়।
১৯৩৫ সালের ১৫ মে মেট্রো ব্যবস্থার প্রথম অংশের উদ্বোধন করা হয়। প্রথমে ২ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ এটি ব্যবহার করলেও বর্তমানে প্রতিদিন নয় মিলিয়ন মানুষ তা ব্যবহার করে। এতে ১২টি লাইনের আওতায় ১৯৬টি স্টেশন রয়েছে। এ স্টেশনগুলোর অনেকগুলোরই সাজসজ্জা অসাধারণ। ফটোগ্রাফার বার্ডেনি রাশিয়ায় ভ্রমণ করেন ২০১৪ ও ২০১৫ সালে। এ সময় তিনি ৩০টি মেট্রো স্টেশনের বিভিন্ন স্থানের ছবি তোলেন। এছাড়া তিনি চারটি রাজপ্রাসাদ, থিয়েটার ও জাদুঘরেরও ছবি তোলেন। সাধারণত রাতে যখন স্টেশনগুলো নির্জন থাকে, তখনই তিনি ছবি তোলেন।
বার্ডেনি তার ছবি তোলা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্টেশন তিনি ভ্রমণ করছেন এবং তুলছেন অসাধারণ সে দৃশ্যের ছবি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একজন আর্কিটেকট ও ডিজাইনার হিসেবে আমি আর্কিটেকচারের নানা রূপ পছন্দ করি। আমি নির্মাতাদের খুবই শ্রদ্ধা করি। এছাড়া যে কারিগরেরা তাদের হাত ও মন ব্যবহার করে তাদের সময়কে এসব অসাধারণ নকশায় ফুটিয়ে তুলেছেন তাদেরও শ্রদ্ধা করি। এ প্রকল্প সে বিষয়টিই তুলে ধরছে।’