
পিটি ড্রিল ছেড়ে শুধু যোগব্যায়াম করবে বিএসএফ
ঢাকা, ০৩ আগস্ট, (ডেইলি টাইমস ২৪):
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে তাদের প্রায় আড়াই লক্ষ সদস্য দৈনন্দিন শরীরচর্চার জন্য এখন থেকে যোগব্যায়াম করবে। ফিজিক্যাল ট্রেনিং অর্থাৎ পি টি করতে হবে না তাদের রোজ সকালে।
বাহিনীর মহাপরিচালক কে কে শর্মা সরকারি সংবাদ সংস্থা পি টি আই-কে বলেছেন, যোগব্যায়াম বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সীমান্ত রক্ষী – সকলের জন্যই। রোজকার শরীরচর্চার জন্য পিটি-র বদলে যোগব্যায়াম করতে হবে বাহিনীর সদস্যদের।
যোগব্যায়াম শেখানোর জন্য যোগগুরু বাবা রামদেবের কাছে বিএসএফর প্রায় দুই হাজার সদস্যকে পাঠানো হয়েছিল। ১৮২ টি ব্যাটালিয়নের প্রতিটি থেকে নয়জনের একেকটি দল যোগব্যায়াম শিখতে গিয়েছিলো হরিদ্বারে বাবা রামদেবের আশ্রমে।
সেই প্রশিক্ষণ সবেমাত্র শেষ হয়েছে। তারাই দিনকয়েকের মধ্যে নিজেদের ব্যাটালিয়নে ফিরে গিয়ে বাকিদের যোগব্যায়াম শেখাবেন।
বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন তারা এখনও শরীরচর্চার অংশ হিসাবে যোগব্যায়াম করে থাকেন তবে অনিয়মিতভাবে – কখনও সপ্তাহে এক বা দুদিন।
বি এস এফ মহাপরিচালক বলেছেন, যোগব্যায়াম ছাড়া আর কোনও শরীরচর্চার প্রয়োজন আছে কী না, সেটা ঠিক করতে সিনিয়র অফিসারদের নিয়ে তিনি একটি কমিটি করে দিয়েছেন।
মহাপরিচালকের এই ঘোষণার পরে বাহিনীর কোনও কর্মরত অফিসার মন্তব্য করতে রাজী হন নি। তবে সমালোচনা করেছেন সাবেক কর্মকর্তারা।
বিএসএফের প্রাক্তন পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান – অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসাবে অবসর নেওয়া অফিসার রভি পোনোঠ বিবিসি বাংলা-কে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত। পিটি আর অন্যান্য শারীরিক কসরতের সঙ্গে যোগ ব্যায়াম করানো যেতে পারে, কিন্তু শুধুই যোগ ব্যায়াম করলে ছেলেরা কাজ করবে কী করে?’
বিএসএফকে সীমান্ত প্রহরা দেওয়া ছাড়াও মাওবাদী অধ্যুষিত অঞ্চলে জঙ্গি-দমন কাজে ব্যবহার করা হয়।
রভি পোনোঠ বলরছন, ‘সীমান্ত পাহারা বা জঙ্গি দমনের মতো অপারেশনাল এলাকায় কাজ করার জন্য শুধুই যোগব্যায়াম করানো হলে কখনই ব্যাটলওয়ার্দিনেস অর্থাৎ যুদ্ধের জন্য কোনও সৈনিক প্রস্তুত কিনা তা বোঝা সম্ভব না।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যোগব্যায়ামকে একটা জাতীয় কর্মসূচীতে পরিণত করেছেন, যা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। যোগগুরু রামদেবের সঙ্গেও নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
অনেক সরকারী বিভাগেই তাই যোগব্যায়ামকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিএসএফের মহাপরিচালকও প্রধানমন্ত্রীর সেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিজের বাহিনীতে প্রয়োগ করতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা