
যতদিন প্রয়োজন ১০ টাকা কেজি চাল কর্মসূচি চলবে
ঢাকা, ০৫ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন দেশের হতদরিদ্রের মাঝে ১০ টাকা কেজি করে চাল বিক্রি কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তবে এই চাল বিতরণ এবং হতদরিদ্রের তালিকা প্রণয়নে কোনো অনিয়ম বা গরমিল সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বুধবার জাতীয় সংসদে মীর শওকাত আলী বাদশা ও ইসরাফিল আলমের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চাল বিতরণে অনিয়ম পাওয়া গেলে ডিলারদের ডিলারশিপ বাতিল এবং তালিকা প্রণয়নে কোনো গরমিল বা অনিয়ম পাওয়া গেলে জড়িত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সকল সংসদ সদস্য এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের স্ব স্ব এলাকায় তালিকা যাচাই-বাছাই এবং অনিয়ম খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
এসময় তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ হতাশা থেকে এখন আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। দেশের মানুষকে বঞ্চনা থেকে মুক্ত করে তাদের জীবনকে হাসি-খুশিতে ভরে দেয়া এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমরা একমাত্র লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাথার পাথর বুকে নিয়ে চলছি একটাই লক্ষ্য নিয়ে- তা হচ্ছে মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আর দেশ থেকে যেভাবে দারিদ্র্য দূর হচ্ছে, মানুষের আর্থিক সক্ষমতা তৈরি হচ্ছে, ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে আর কাউকে সাহায্য দেয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ১০ টাকা কেজি করে চাল দেয়ার কোনো প্রতিশ্রুতি ছিল না। ৯৬ সালের আগে নির্বাচনী বক্তৃতায় আমি ১০ টাকা কেজি চালের কথা বলেছিলাম।’
শেখ হাসিনা বলেন, ৯৬ সালে ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি নিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলাম। মাত্র ৫ বছরে খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম।
তিনি বলেন, ক্ষমতা ছাড়ার সময় ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে গিয়েছিলাম। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে আবারও দেশকে খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি, তখনও দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। পরবর্তীতে আবারও দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করার পাশাপাশি এখন বাংলাদেশ খাদ্য রফতানির সক্ষমতাও অর্জন করেছে।
ইস্রাফিল আলমের সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সরকার প্রধান আরও বলেন, ১০ কেজি করে চাল প্রদানের কর্মসূচি দীর্ঘদিন চালু থাকবে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দরিদ্রবান্ধব কর্মসূচি নেই।
মো. আবদুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেবল অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করা যাবে না। এ জন্য সামাজিক শক্তির উদ্যোগে মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন আনতে হবে। এ বিষয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করে যাচ্ছে।
হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ রোধসহ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এবং সার্বিক আইনশৃংখলা রক্ষার মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, জনগণের মৌলিক ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে দৃঢ প্রতিজ্ঞ।
আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, পায়রা সমুদ্রবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কাজ ২০২৩ সাল নাগাদ শেষ হবে। তবে তিনটি জেটি নির্মাণের কাজ ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ হবে।