বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ইউটিউব তারকারা যেভাবে মিলিয়ন ডলার কামাতেন তা বদলে যাচ্ছে

ঢাকা, ০৯ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):

অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই ইউটিউবের অসংখ্য তারকা একটি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করছেন। আর সেটি হলো ইনস্টাগ্রাম।
অনেক ইউটিউব তারকাই বৈচিত্রপূর্ণ আয় প্রবাহ তৈরি করেছেন। যা থেকে তারা বছরে সর্বোচ্চ মোট ১২ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
আর এই শিল্প দ্রুতই পরিবর্তিত হচ্ছে। জানুয়ারিতে বিজনেস ইনসাইডার স্কট ফিশার এবং অ্যাডাম ওয়েসকটের সাক্ষাৎকার নেয়। এরা ইউটিউব তারকা মাইলাইফএজইভা (৭.২ মিলিয়ন গ্রাহক) এবং লৌরডিআইওয়াই (৪.২ মিলিয়ন গ্রাহক) এর ব্যবস্থাপক ছিলেন। এদের কাজ ছিল কীভাবে অর্থ আয় হচ্ছে তা বুঝা।
কিন্তু জানুয়ারির পর অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়ে গেছে। বিশেষ করে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের উত্থানে এমনটা হয়েছে। এ দুটি প্লাটফর্মও ভিডিও সুপারস্টারদের জন্য একটি বিশাল বাজার তৈরি করে দেয়। যেভাবে বদল ঘটল:
ইনস্টাগ্রাম ব্র্যান্ডের রাজা
ইউটিউব তারকারা মূলত গুগল অ্যাড থেকেই তাদের আয়ের সিংহভাগ অর্জন করতেন। ওয়েসকট বলেন, এখন স্পন্সরড ভিডিওর ব্র্যান্ড থেকেও প্রচুর পরিমাণ অর্থ আয় সম্ভব।
সবগুলো প্রতিভাবান প্ল্যাটফর্মেরই ব্র্যান্ডফ্রন্টের প্রভাব উত্তোরত্তর বেড়ে চলতে দেখছি। তবে ইনস্টাগ্রাম বিশেষ করে প্রিয়তম ব্র্যান্ড হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে। মাত্র আট মাস আগেও ইনস্টাগ্রাম শুধু ইউটিউবের একটি পরিপূরক প্ল্যাটফর্ম ছিল। সেসময় এর কোনো গুরুত্বই ছিল না বলা চলে। অথচ ইনস্টাগ্রামই এখন প্রধান ঘটনা। কেন এমনটা হলো?
ওয়েসকট বলেন, “সৃজনশীলতার নিরিখে এটি একটু বেশিই নিয়ন্ত্রণযোগ্য। এটি একটি একক চিত্র বনাম তিন থেকে পাঁচ মিনিটের ভিডিও।” আর এ কারণেই ইনস্টাগ্রামে বিশাল সংখ্যক শ্রোতা-দর্শক পাওয়া সম্ভব।
তবে ২০১৬ সালের প্রথম দিকে স্ন্যাপচ্যাটের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল ইনস্টাগ্রাম। কিন্তু স্পন্সরড কন্টেন্ট এর পরিপ্রেক্ষিতে ইনস্টাগ্রাম বিজয়ী হয়।
কোন প্ল্যাটফর্মটি বেছে নিতে হবে
কোন ব্র্যান্ডের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে শুধু সে বিষয়েই খদ্দেরদেরকে উদ্বিগ্ন হলে চলবে না। ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক এবং স্ন্যাপচ্যাট এই সবগুলোই এখন প্রধান বিতরণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সুতরাং তারকাদেরকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন প্ল্যাটফর্মে নিজেদের সময় ব্যয় করতে চান।
ওয়েসকট যেভাবে তার খদ্দেরদের জন্য প্ল্যাটফর্ম ভাগাভাগি করেছে: ইউটিউবে দীর্ঘ ভিডিও প্রকাশ, ইনস্টাগ্রামে দর্শক সংশ্লিষ্টতা বাড়ানো, ফেসবুকে চটকদারি কিছু করা।
ওয়েসকটের খদ্দের গিগি গর্জিয়াস থেকে এর একটি উদাহরণ দেওয়া চলে। গিগি গর্জিয়াস ইউটিউব থেকে সপ্তাহে একটি মৌলিক ভিডিও প্রকাশ করবে। যার দৈর্ঘ্য হবে তিনি থেকে পাঁচ মিনিট। এরপর এ থেকে কাটাকাটি করে ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হবে ফেসবুকে। ফেসবুক থেকে আয় বাড়লে এতে পরিবর্তনও আসতে পারে।
নতুন টেলিভিশন
আরেকটি নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র হলো ইন্টারনেটে টিভি সিরিজ বিক্রি করা। বিশেষ করে ইউটিউব সংশ্লিষ্ট আউটলেটগুলোর মাধ্যমে এই বিক্রি সম্ভব। উদাহরণত, ইউটিউব রেড এবং ভেরাইজনের গো৯০।
ওয়েসকট বলেছে, “দৃশ্যের আড়ালে অসংখ্য ডলারের প্রবাহ বিরাজমান। কিন্তু দর্শকরা কিছুটা সময় ধরে তা দেখতে পারছেন না।” মাইলাইফ এজ ইভা (ইভা গুটোস্কি) ২০১৭ সালে আধা ঘন্টার একটি কমেডি সিরিজ ইউটিউব রেড-এ প্রকাশ করবেন। আর গিগি গর্জিয়াসও ইউটিউবে তার জীবনীর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত একটি ডকুমেন্টারি ছাড়তে যাচ্ছেন।
তবে ওয়েসকট নেটফ্লিক্স, এমটিভি বা সিডব্লিউ এর মতো আরো বেশি প্রতিষ্ঠিত খেলোয়াড়দেরকেও অন্তর্ভুক্ত করতে চাচ্ছে।
কিন্তু ইউটিউবের মতো আর কোনো প্ল্যাটফর্মের সঙ্গেই তারকারা বেশি উচ্চমূল্যের সিরিজগুলোর জন্য এমন ব্লকবাস্টার চুক্তি করতে পারবেন না। অবশ্য নেটফ্লিক্সও খেলার ময়দানে প্রবেশ করেছে। এটি মিরান্ডা সিংস এবং ভাইন স্টার ক্যামেরুন ডালাসের কাছ থেকে সিরিজ কিনছে।
পরের কয়েকমাসেই এই প্ল্যাটফর্মের কোনটির দর্শকদের মধ্যে ইউটিউব তারকারা যেসব ভিডিও প্রকাশ করেন সেসবের প্রতি সত্যিকার আগ্রহ আছে তা স্পষ্ট হবে। ওয়েসকট বলেন, এখন দেখার পালা দর্শকদের দৃষ্টি কোথায় গিয়ে গেঁড়ে বসে।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button