
পানছড়িতে ইউপিডিএফ ও জেএসএস কার্যালয়ে পাল্টাপাল্টি অগ্নিসংযোগ
ঢাকা, ১০ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
জেলার পানছড়িতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস-এমএন লারমা) গ্রুপের মধ্যে বিরোধের জের ধরে দুটি কার্যালয়ে পাল্টাপাল্টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এদিকে আজ সোমবার দুপুরে আধা ঘন্টার ব্যবধানে দুই কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। তবে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে জেএসএস কার্যালয়ে একদল লোক আগুন লাগায়। আধা ঘন্টার ব্যবধানে আরেক দল লোক এসে ইউপিডিএফ কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে। তার আগেই দুটি কার্যালয় আগুনে প্রায় পুড়ে যায়। এই ঘটনায় পানছড়ি কলেজ গেট এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে গতকাল রবিবার রাতে উভয় কার্যালয়ে বাদানুবাদ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলেও জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জেলার সহকারি পুলিশ সুপার মো: রইছ উদ্দিন জানান, রবিবার রাতে জেএসএস এর ৯ সদস্যকে ইউপিডিএফ এবং এইউপিডিএফ এর ৩ সদস্যকে জেএসএস সদস্যরা ধরে নিয়ে যায়। রাতেই উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে অপহৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার রেশ ধরেই সোমবার দুপুরে পরস্পরের কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে পানছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল জাব্বার জানান, সম্ভবত রাজনৈতিক প্রভাব ও এলাকায় আধিপত্য নিয়ে মতবিরোধের কারণে পাল্টাপাল্টি আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কেন্দ্রীয় সহকারি তথ্য ও প্রচার সম্পাদক প্রশান্ত চাকমা অভিযোগ করেন, পার্বত্য চুক্তি অনুয়ায়ী ল্যান্ড কমিশনের কার্যক্রম চালু হতে দেখে চুক্তির বিরোধিতাকারী ইউপিডিএফ এর গায়ে জ্বালাতন করছে। সে কারণেই তারা এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে ইউপিডিএফ এর পানছড়ি শাখার সংগঠক জিদং চাকমা বলেন, ‘তারা নানাভাবে উস্কানিমূলক তৎপরতা চালিয়ে আসছে। এলাকায় একক কর্তৃত্ব প্রকাশের উদ্দেশেই তারা আমাদের কার্যালয়ে আগুন লাগিয়েছে।’
জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউপিডিএফ ও এমএন লারমা গ্রুপ হিসেবে পরিচিত জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধ চলে আসছে। বিশেষত: জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সাথে চির শত্রু ইউপিডিএফের মধ্যে বছর খানেক আগে এক ধরনের সমঝোতা হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠে। তারপর থেকে ইউপিডিএফ-জেএসএস (এমএন লারমা গ্রæপ) এর মধ্যে দূরত্ব দেখা দেয়। তার আগ পর্যন্ত সন্তু লারমার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১০ সালে গঠিত জনসংহতি সমিতির বিভক্ত অংশটির সাথে (জেএসএস-এমএন লারমা গ্রুপ) পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সংগঠন হিসেবে খ্যাত ইউপিডিএফ এর সখ্যতা গড়ে উঠেছিল।