
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাচারের শিকার বাংলাদেশীর মৃত্যু
ঢাকা, ১১ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
মানবপাচারকারীদের কবলে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় হবিগঞ্জের বাহুবলের এক তরুণের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তার নাম কাওসার এলাহী। সে উপজেলা সদরের হাসপাতাল এলাকার বাসিন্দা মরহুম মাওলানা আশিক এলাহীর পুত্র।
পাচারের শিকার কাওসারের অপর সহযাত্রী তরুণ আশিকুর রহমানের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ৫ অক্টোবর জালাল মিয়া নামের স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে সিলেটের তাজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুর নামক একটি প্রতিষ্ঠান নিহত কাওসারসহ ১২ জনের একটি দলকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাচার করেছিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় যেতে প্রতিষ্ঠানটি প্রত্যেকের কাছ থেকে জনপ্রতি ৬ লাখ টাকা করে নেয়।
এরপর গত ৯ অক্টোবর রাতে কাওসার এলাহীর মৃত্যুর খবর আসে।
সূত্র আরও জানায়, ৫ অক্টোবর ঢাকা থেকে বিমানযোগে বোম্বে ও বোম্বে থেকে ইথোফিয়া এবং ইথোফিয়া থেকে মুজাব্বিকে যাত্রা করে তারা। গত ৮ অক্টোবর দালালরা ১২ সদস্যের দলটিকে মুজাব্বিক থেকে বাইরুটে পাচার পরে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যায়।
এর পরদিন ৯ অক্টোবর দালালরা প্রথমে জানায় কাওসার এলাহী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। পরে ওইদিন রাতেই দালালরা স্বীকার করে কাওসার এলাহী দক্ষিণ আফ্রিকায় মারা গেছে।
সোমবার রাতে নিহত কাওসারের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে শোকের মাতম চলছে। কাওসারের মা একমাত্র পুত্রকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে।
নিহতের চাচা হাবিবুর রহমান (মকছুদ) জানান, দালাল মারফত আমরা তার (কাওসার এলাহী) মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছি। দালালরা তার মৃত্যুর যে কারণ বলছে তা আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, মৃত্যুর খবর জানানোর ২৪ ঘন্টা পরও দালালরা হাসপাতালের (যে হাসপাতালে কাওসার মারা গেছে) আমাদের ঠিকানা দিতে পারেনি। এতে তার মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দানা বাঁধছে।
এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুর রহমান বলেন, দলালরা লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করছে বলে আমাদের জানিয়েছে।
তিনি বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কাউসারের সহযাত্রী আশিকুর রহমান তার পিতার মোবাইলে কল দিয়ে ৩০ সেকেন্ড কথা বলেছে। এ সময় সে জানিয়েছে, কাওসার এলাহী মারা গেছে, আমিও বাঁচব না, আমার জন্য দোয়া করো।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি বাহুবল মডেল থানা পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন নিহতের মা মাহমুদা আখঞ্জী।