অর্থ ও বাণিজ্য

সিএমএইচে ক্যান্সার সেন্টার

ঢাকা, ১১ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):

ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থাপন করা হচ্ছে ক্যান্সার সেন্টার। বর্তমানে দেশে প্রাণঘাতী এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হওয়ায় এটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা  জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সিএমএইচে ক্যান্সার সেন্টার নির্মাণের মাধ্যমে দেশেই এ রোগের উন্নত চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব হবে। ফলে রোগীদের বিদেশ যেতে হবে না। বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বছরভিত্তিক প্রয়োজনীয় বরাদ্দের বিষয়টি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করবে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে প্রক্রিয়াকরণের কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। এখন শুধু অনুমোদনের অপেক্ষা।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ক্যান্সারের চিকিৎসাসেবা প্রদানের পর্যাপ্ত সুবিধার অভাব রয়েছে।

অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার অভাবে এ হাসপাতালের ক্যান্সার ব্যবস্থাপনা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সার্জারি, কেমোথেরাপি এবং অন্যান্য চিকিৎসাসেবা সিএমএইচে চলমান থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

বলা হয়েছে, দেশে ক্যান্সারের উন্নত চিকিৎসাসেবার পর্যাপ্ত প্রতিষ্ঠানের অভাবে অনেক মানুষ বিদেশ গিয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছে। ফলে দেশ প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে। প্রস্তাবিত হাসপাতালে সামরিক বাহিনীর সদস্য ও তাদের পরিবার ছাড়াও বেসামরিক জনগণকে সুলভ মূল্যে ক্যান্সার চিকিৎসা দেয়া হবে। এ বিবেচনায় ক্যান্সারের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ঢাকার সিএমএইচে ক্যান্সার সেন্টার নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ৪তলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র সংগ্রহ করা। এসব কিনতে ব্যয়ের যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা হল- রাজস্ব ব্যয় ৬৬ লাখ টাকা, ফার্নিচার ও ফিক্সচার ১ কোটি ৩৬ লাখ, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ খাতে ৫৫ কোটি ৩৯ লাখ, নির্মাণ ব্যয় ৩৯ কোটি ৫৪ লাখ ৫ হাজার, প্রশিক্ষণে ২৫ লাখ, অন্যান্য ব্যয় ৬৮ লাখ এবং ফিজিক্যাল ও প্রাইস কন্টিনজেন্সি ১৭ লাখ টাকা।

অর্থবছরভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের চাহিদা হচ্ছে- চলতি অর্থবছরে (২০১৬-১৭) ১৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫০ কোটি এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রয়োজন হবে ৩৩ কোটি ১১ লাখ টাকা। অর্থের সংস্থান সম্পর্কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, মধ্য মেয়াদি বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) আওতায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে উন্নয়ন খাতে দেয়া মোট বাজেট বরাদ্দের সিলিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে প্রকল্পটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সুপারিশ অনুযায়ী প্রকল্পটি আগামী একনেক বৈঠকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button