
শাহজালালে ১৭৯যাত্রীকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিল ফ্লাই দুবাই
ঢাকা, ১২ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
শাহজালালে ১৭৯যাত্রীকে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে ফ্লাই দুবাই। গত ১০ অক্টোবর সোমবার ফ্লাই দুবাই’র এফজেড-৫৮৬ ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময় রাত ১০টায় ১৭৯ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাবার কথা ছিল। কিন্তু অপরপ্রান্ত থেকে ফ্লাইটটি আসতে বিলম্ব হওয়ায় এটি ২২ ঘণ্টা বিলম্বে গতকাল ১১ অক্টোবর রাত ৮টায় ছেড়ে যেতে হয়।
মাঝখানের ২২ ঘণ্টা বিলম্বকালীণ সময়ে ফ্লাই দুবাই যাত্রীদের হোটেলে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করলেও এতে অনেক যাত্রী ক্ষতির সন্মুখীন হয়। বেশিরভাগ যাত্রীর রি-এন্ট্রি তারিখ পার হয়ে যাওয়ার সমস্যা, অনেকের দেরিতে চাকরিতে যোগদানের কারণে সম্পূর্ণ মাসের বেতন খোয়ানোর আশংকা, কারও আবার ভিন্ন এয়ারলাইন্সে অন-ওয়ার্ড কানেক্টিং ফ্লাইট মিস হওয়ার বিষয়গুলো ফ্লাই দুবাইকে জানালেও তারা কোনও সমাধান দেয়নি।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল ১১ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় বিমানবন্দরের কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফ্লাই দুবাইর স্টেশন ম্যানেজারকে ফোন করে বিষয়টি যৌক্তিকভাবে মীমাংসা করে ফেলার অনুরোধ করেন। এরপর ফ্লাই দুবাই কর্তৃপক্ষ যাত্রী প্রতি ৩ হাজার টাকা করে মোট ৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেন যাত্রীদের হাতে।
এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, টেকনিক্যাল কারণে ফ্লাইট ডিলে হতে পারে, এটা দোষের কিছু না। তবে ডিলের ক্ষেত্রেও কিছু আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন মেনে ব্যবস্থা নিতে হয়। ডিলে-টাইম পাঁচ ঘণ্টার বেশি হলে কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ফ্লাইটের সম্ভাব্য সময় জানিয়ে যাত্রীদের মতামত নিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করবে-
১. যাদের ঐ দিন গন্তব্যে পৌঁছানো জরুরি তাদের প্রায়োরিটি দিয়ে অন্য এভেইলেবেল এয়ারলাইন্সে টিকেট কেটে পাঠিয়ে দিতে হবে।
২. অন্য এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বা টিকেট না থাকার কারণে পাঠানো সম্ভব না হলে টিকেটের অর্থ রিফান্ডের প্রস্তাব দিতে হবে, যাতে যাত্রী নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
৩. যারা পরবতী ফ্লাইটে গেলে সমস্যায় পড়বে না, তাদের থাকা-খাওয়া-যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে।
এক্ষেত্রে ফ্লাইদুবাই ১নং ও ২ নং শর্তের কোনওটিই পালন করে নাই। এতে করে যেসব যাত্রীর রি-এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ, তাদেরকে বড় অংকের ওভার-স্টে ফাইন দিয়ে দুবাই ইমিগ্রেশন পার হতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ফাইন নিয়েও ঢুকতে দেয়া হয় না। ছুটির মেয়াদ শেষে যথাসময়ে কাজে যোগ দিতে না পারায় অনেক যাত্রীকে মাসিক বেতনের একটা বড় অংশ খোয়াতে হবে। অনেকের পূর্বনির্ধারিত গুরুত্বপূর্ণ কাজ মিস হবে। অথচ ১নং এবং ২নং ক্রমিকের শর্তগুলো পালন করলেই ফ্লাই দুবাই এ বিষয়গুলো এড়াতে পারতো। আর এ জন্য দায়ী ফ্লাইদুবাই’র এখানকার কর্মকর্তাদের অজ্ঞতা বা দায়িত্বে অবহেলা।
ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ বলেন, এ ধরনের অতিরিক্ত বিলম্বের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিমানসহ অন্যান্য সকল এয়ারলাইন্স যাত্রীদের রি-এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ, ছুটির মেয়াদ ইত্যাদি পরীক্ষা করে প্রায়োরিটির ভিত্তিতে আইন মেনে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। তবে উক্ত বিষয়ে যেহেতু শেষ পর্যন্ত ফ্লাই দুবাই নিজ থেকে যাত্রীদের সাথে মীমাংসা করে ফেলেছে, সেহেতু আইন না মানার বিষয়টি নমনীয়ভাবে বিবেচনায় নিয়ে মামলা নেয়া হয়নি। মামলা নেয়া হলে, ১৭৯জন প্যাসেঞ্জারের বিপরীতে ফ্লাইদুবাইর ১৭৯ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারতো।