জাতীয়

জিনপিংয়ের সফরে নতুন যুগের সূচনা: শেখ হাসিনা

ঢাকা, ১৩ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪): চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন যুগের সূচনা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বহু প্রতীক্ষিত এ সফরের মধ্য দিয়ে আমরা এই সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।’

গত মঙ্গলবার গণভবনে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা এ আশাবাদ প্রকাশ করেন।

গত ৩০ বছরের মধ্যে চীনের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শুক্রবার বাংলাদেশে আসছেন শি জিনপিং। দু’দিনের এ সফরে দু’দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি চীনও জিনপিংয়ের এ সফরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশে আসছেন—এজন্য আমরা খুবই খুশি ও সম্মানিত বোধ করছি। এ সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে নিবিড় সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আমি আশাবাদী।’

শি জিনপিংয়ের এ সফর দক্ষিণ এশিয়ার জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

চীনের প্রেসিডেন্টের সফরের তাৎপর্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “ইতিহাসের এমন এক সময়ে শি জিনপিং এখানে আসছেন, যখন বাংলাদেশ ‘নিম্নস্তরের ভারসাম্য ফাঁদ’ প্রায় ভেঙে ফেলার পথে রয়েছে এবং সবার জন্য সমৃদ্ধি, বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের একটি ‘ব্র্যান্ড নিউ’ ক্ষেত্র হিসেবে উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, ‘চীন আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। আমরা দেশটিকে আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নেরও বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি। অর্থায়ন, পুঁজি সরবরাহ ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বাংলাদেশের অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে চীন মূল চালিকাশক্তিও বটে।’

সমন্বিত সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ-চীন অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এখন সম্ভাব্য সব খাতই ছুঁয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বিগত দশকগুলোয় দু’দেশের সহযোগিতার সম্পর্ক পরিপক্কতা লাভ করলেও ভবিষ্যতে তা আরও বিস্তৃত করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রে অবকাঠামো উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, বস্ত্র, চামড়া, পেট্রোকেমিক্যাল, ওষুধ, জাহাজনির্মাণ ও ইলেক্ট্রনিক্স খাতে বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেন। চট্টগ্রামে চীনের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কথা জানিয়ে তিনি দেশটির ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

চীনের প্রস্তাবিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার বাকি অংশের যোগাযোগ তৈরিতে তারা কাজ করছেন। এছাড়া দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একটি একক অর্থনৈতিক যোগাযোগ তৈরিতেও তারা কাজ করছেন। এটা পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বৃহত্তর যোগাযোগ তৈরির পাশাপাশি দক্ষিণের সমুদ্রবন্দরগুলোর মাধ্যমে তিনটি ইকোসিস্টেমকে বাকি বিশ্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত করবে।’

চীন-বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে উচ্চাশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সম্পর্ক পাঁচটি মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে; তা হলো—শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, সুপ্রতিবেশীসুলভ চেতনা, পারস্পরিক বিশ্বাস, আস্থা ও একে অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা।’

বাংলাদেশ এক চীন নীতিতে বিশ্বাৃসী জানিয়ে তাদের জাতীয় স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্ব ও সীমান্ত সুরক্ষায় বেইজিংকে সমর্থনের কথা বলেন শেখ হাসিনা।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button