জাতীয়

ঢামেকে অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় মা-ছেলেসহ নিহত ৩

ঢাকা, ১৫ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) পুলিশ ক্যাম্পের সামনে অ্যাম্বুলেন্সচাপায় মা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। গর্ভের সন্তান হারিয়েছেন আমেনা বেগম সূর্যি (৩৫) নামে এক নারী।

শনিবার সকাল ৯টার দিকে ‘মানব সেবা’ নামে একটি অ‌্যাম্বুলেন্স নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পথচারীদের উপর উঠে গেলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। ওই অ্যাম্বুলেন্সে কোনো রোগী বা লোক ছিলেন না।

নিহতদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- সাকিব (৭) ও তার মা গোলিনুর বেগম (২৫)। গোলিনুরের স্বামীর নাম ফেরদৌস মিয়া । তার বাড়ি পটুয়াখালীর রাঙাবালির বাইজদা এলাকায়।

নিহত অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি। তবে তিনি হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সামনের রাস্তার পাশে বসে ভিক্ষা করতেন বলে জানা গেছে।

নিহত গোলিনুরের স্বামী ফেরদৌস মিয়া জানান, পটুয়াখালীতে দুদিন আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পায় তার ছেলে সাকিব। সাকিবকে ডাক্তার দেখাতে তারা হাসপাতালে এসেছিলেন।

শুক্রবার সপরিবারে ঢাকায় আসেন তিনি। তার সঙ্গে অন্য ছেলে আকাশও ছিল। আকাশের বয়স সাত মাস।

ফেরদৌস সূত্রাপুরে শ্যালক ফারুকের বাসায় উঠেছিলেন। সকালে সবাইকে নিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেলে আসেন।

অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় সাকিব ঘটনাস্থলেই মারা যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল ৩টায় মারা যান সাকিবের মা গোলিনুর বেগম। সাকিবের ভাই আকাশও মাথায় আঘাত পেয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি দ্রুতবেগে হাসপাতালে ঢুকছিল। এসময় পুলিশ ফাঁড়ির সামনে একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। পাশপাশি কয়েকজন পথচারীকে চাপা দেয়।

তিনি জানান, অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় আট বছর বয়সী শিশু সজিব, সাত বছর বয়সী শিশু আকাশ, রমজান, আমেনা বেগম সূর্যি এবং রিকশাচালক রমজান আহত হন। তাদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এসআই বাচ্চু আরও জানান, ওই অ্যাম্বুলেন্সের মালিকের নাম নাসির। তবে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন না। গাড়ি চালাচ্ছিল নাসিরের সহকারী সোহেল।

হাসপাতালের ক্যাজুয়াল্টি বিভাগের চিকিৎসক মো. আশরাফ উদ্দিন খান জানান, দুর্ঘটনার কারণে সূর্যির পেটের ছয় মাসের সন্তানটি মারা গেছে।

সূর্যির স্বামী ট্রাকচালক জাকির হোসেন গত ২৫ আগস্ট চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। এর দুদিন পর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় সূর্যির স্বামী জাকির জানান, তার স্ত্রী ছয় মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা ছিলেন। হাসপাতালে তার স্ত্রী তাকে দেখাশোনা করতেন। তার স্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পুত্রসন্তান সজিব। সকালে তার জন্য নাস্তা আনতে গিয়ে অ‌্যাম্বুলেন্সচাপায় দুইজনই আহত হন। নষ্ট হয়ে যায় সূর্যির পেটের সন্তান। সজিবের বাম পা ভেঙে গেছে।

শাহবাগ থানার ওসি মো. আবু বকর জানান, লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সের চালক সোহেলকে আটক করা হয়েছে।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button