জাতীয়

সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুর রৌফ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ঢাকা, ২১ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রৌফ চৌধুরীর নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (শুক্রবার)। মরহুম আব্দুর রৌফ চৌধুরী ছিলেন বৃহত্তর দিনাজপুরের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ পৌরসভাধীন সম্ভ্রান্ত ধনতলা চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি এবং ২০০৭ সালের ২১ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।

রৌফ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে তার কবরে রৌফ চৌধুরী ফাউন্ডেশনসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। দরিদ্রদের মাঝে কাপড় ও খাবার বিতরণ এবং এতিমখানায় দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে। পারিবারিকভাবে এবং জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোরআনখানি ও মিলাদের আয়োজন করেছে।

মরহুম আব্দুর রৌফ চৌধুরী ১৯৫২ সালে সিরাজগঞ্জ থেকে মেট্টিকুলেশন, এরপর ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি ও দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। সিরাজগঞ্জে পড়ার সময়েই তিনি ভাষা আন্দোলনে একজন সক্রিয় সংগঠক ছিলেন এবং এজন্য তিনি কারাবরণ করেন। পরে এইচএসসি পরীক্ষা দেন ঢাকা কলেজ থেকে। সেখানে পড়াবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দিনাজপুরে ফিরে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেন।

তিনি বৃহত্তর দিনাজপুর (দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়) জেলার ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্র সংসদের নেতৃত্ব দেন। কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন পালন করেছেন দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব। বাংলাদেশ সমবায় ফেডারেশন ও বিআরডিবির প্রতিষ্ঠায়ও তার ভূমিকা অনন্য। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রণীত ৬ দফা আন্দোলন পরবর্তীতে ছাত্র সমাজের ১১ দফাসহ আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে রৌফ চৌধুরী ছিলেন প্রথম কাতারে।

স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পূর্বাঞ্চলীয় জোনে মুজিব সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও কামরুজ্জামানের দূত হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। পঁচাত্তরে  জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন এবং পঁচাত্তরপরবর্তী সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে রৌফ চৌধুরীর ভূমিকা অসামান্য। যার ফলে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। আশির দশকে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের একনাগারে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময়ে দলের দুর্যোগ মুহূর্তে তিনি নিজের জমি বিক্রি করে দলকে সুসংগঠিত করেছিলেন।

১৯৮৮ সালে বোচাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ১৯৯৬ সালে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখায় বিএনপি-জামায়াতের হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে অসুস্থাবস্থায় ২০০৭ সালের এ দিনে তার মৃত্যু হয়। তার বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি স্ত্রী রমিজা বেগম, একমাত্র পুত্র ও ৫ কন্যা রেখে যান।

রৌফ চৌধুরীর একমাত্র পুত্র খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বর্তমানে দিনাজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button