
জেলে কন্যাকে ধর্ষণ, মামলা নিলো না পুলিশ
ঢাকা, ২১ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
প্রভাবশালী পরিবারের বখাটে সন্তানের লালসার শিকার দরিদ্র ঘরের কন্যাদের বিচার ভাগ্যও বরাবরই খারাপ হয়। নিজের সর্বস্ব হারিয়েও বিচারের জন্য ধর্না দিয়ে ফিরতে হয় তাকে। তবু ন্যায় বিচার যেন তার থেকে থাকে যোজন যোজন দূর।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার এক দরিদ্র জেলে পরিবারের কন্যার সঙ্গে। প্রভাবশালী পরিবারের বখাটে সন্তানের লালসার শিকার হয়ে থানায় গেলেও অভিযোগ নেয়নি পুলিশ।
উল্টো রাতভর বসিয়ে রেখে সকালে ধর্ষিতার পরিবারকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন এক উপ-পরিদর্শক।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের হরিনাকান্দি গ্রামে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। গ্রামের বড়গোষ্ঠী পরিবার খ্যাত রোজদার মিয়ার বখাটে ছেলে বাছিত মিয়া (২০) এ ঘটনার মূল হোতা। তাকে সহায়তা করে এলাকার রুপা মিয়ার ছেলে জুয়েল।
রাতে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার পথে ওই জেলে কন্যাকে (১৫) জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় বখাটেরা। তাকে গ্রামের একটি পতিত ঘরে আটকে রেখে বাছিত কয়েক দফা ধর্ষণ করে বখাটে বাছিত।
প্রায় ঘণ্টাখানেক পর কিশোরীর পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসী খুঁজতে বের হয়ে তাকে ওই পতিত ঘর থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে।
আইনি সহায়তা পেতে রাতেই পরিবারের সদস্যরা কিশোরীকে নিয়ে হাওরের ২ ঘণ্টা জলপথ পাড়ি দিয়ে থানায় পৌঁছান।
তবে ওসি নেই বলে থানার পুলিশ কর্মকর্তা এসআই জয়নাল ধর্ষণের অভিযোগ নিতে চাননি। রাতভর থানায় থেকে সকালে অভিযোগ দিতে চাইলে ওই এসআই তাদের থানা থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার সকালে যুগান্তরের এ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে ধর্ষিতার অভিভাবক জানান, থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওই অফিসার রাতে কী জানি লেখালেখি করেন। তবে সকালে অফিসার কোথাও চলে গেছেন বলে অভিযোগ না নিয়েই আমাদের থানা থেকে বের করে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে থানার ডিউটি অফিসার এসআই আবদুল ওয়াহিদ বলেন, ওই পরিবারের লোকজন থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে আলাপ করেছেন, পরে কী হয়েছে জানতে পারিনি।
তবে এসআই জয়নালের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি অস্বীকার করেন। পরে আলপচারিতার এক পর্যায়ে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে বিষয়টি ডিউটি অফিসার ডিল করেছেন বলে দায় এড়াবার চেষ্টা করেন।
পরে একাধিকবার ফোন করে এ ঘটনায় কোনো প্রতিবেদন না করার অনুরোধ জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জামালগঞ্জ থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনাটি জেনেছি। আর আমি থানাতেই আছি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এসময় তিনি আরও বলেন, থানায় ওসি না থাকলেও যিনি ওসির দায়িত্বে থাকবেন ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া তার দায়িত্ব।
ওসি বলেন, ওই সেকেন্ড অফিসার কেন এ ধরণের মিথ্যাচার ও তাদেরকে থানা থেকে বের করে দিলেন তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব। এছাড়াও ধর্ষণের ঘটনাটি সত্য হলে তিনি ওই দরিদ্র জেলের পরিবারকে তাদের প্রাপ্য আইনি সহায়তা দিবেন বলেও নিশ্চিত করেন।