আইন ও আদালত

‘গুলশান হামলার অস্ত্র পশ্চিমবঙ্গে তৈরি’

ঢাকা, ২৯ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪): রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে গত ১ জুলাই চালানো হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হয়েছে। আর এটি তৈরিতে সহায়তা করেছে পাকিস্তানি অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা। শনিবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।

হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় ২০ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বিদেশি নাগরিক। পরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে কলকাতা স্পেশাল টাস্কফোর্স (এসটিএফ) খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছয় সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে একজন ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) গোয়েন্দাদের কাছে এসব তথ্য জানিয়েছে।

ঐ সন্ত্রাসী জানায়, বিহারের মুঙ্গার থেকে আগত অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের উপজাতীয় অস্ত্র প্রস্তুতকারকরা গোপনে মালদা সফর করে। সীমান্তবর্তী জেলা মালদার একটি ঘাঁটিতে একে-২২ তৈরি করা হয়। এরপর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা দিয়ে এসব অস্ত্র বাংলাদেশে পাচার করা হয়।

এনআইএ কর্মকর্তাদের ধারণা, প্রশিক্ষণ প্রদানকারী পাকিস্তানিরা দারা আদম খেল সম্প্রদায়ের মানুষ। তাদের নিবাস পেশোয়ার ও কোহাটের মধ্যবর্তী একটি গ্রামে। দারা আদম খেল সম্প্রদায়টি আধুনিক অস্ত্র অনুরুপ অস্ত্র তৈরি করে দিয়ে থাকে।

এনআইয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, আমার এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নই। তবে তারা যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করছে তা পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনের ভাষা। সেখানেই এই গ্রাম অবস্থিত।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আগেই অভিযোগ করেছে, হলি আর্টিজানে হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র সীমান্ত পার হয়ে এসেছে। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম প্রধান মনিরুল ইসলাম এর সঙ্গে মুঙ্গারের সংযোগের কথা উল্লেখ করেছেন। এরপরই বিহার পুলিশ এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করে।

এসটিএফ কর্মকর্তা বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে পুলিশকে দেয়া এক প্রজ্ঞাপনে বিহার পুলিশ নিশ্চিত করেছে, অস্ত্রগুলো তৈরি ও চোরাচালান প্রক্রিয়া মালদা ও পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য স্থানে হয়েছে।

এনআইএ’র ধারণা, গুলশান হামলা চালানোর একমাস আগে একে-২২ ও পিস্তল হামলাকালীদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। তবে নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্ত্রাসীদের কাছে একে-৪৭ জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও কেন একে-২২ তৈরি করা হলো সেটি বুঝতে পারছেন না তারা। একে-২২ অস্ত্রটি মূলত রোমানিয়াতে তৈরি হয়। ভারতে এটি তেমন প্রচলিত নয় এবং এটি অনুরূপ বানানোও কঠিন।

এনআইএ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কম দামের একে-২২ চালানো সহজ। অনভিজ্ঞরাও এটি সহজে চালাতে পারে। গুলশানে রেস্টুরেন্টে হামলাকারীদের জন্য এটি ছিল একেবারে যথোপযুক্ত অস্ত্র।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দারা আদম খেল থেকে ট্রেনে করে যদি অস্ত্র নির্মাণে দক্ষ লোক মালদায় এসে থাকে তবে এটি উদ্বেগের বিষয়। কেননা, এই পাকিস্তানি উপজাতিরা যেকোনো অস্ত্রের কাছাকাছি অনুরুপ অস্ত্র তৈরি করতে পারে। বলা হয়ে থাকে, দারা অস্ত্র নির্মাণে দক্ষ ব্যক্তিরা যেকোনো নতুন রাইফেল ১০ দিনের মধ্যে অনুরুপ নকল তৈরি করতে পারে।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button