
ছত্তিশগড়ে ‘টয়লেট বিপ্লব’ ঘটালেন ১০৫ বছরের নারী
ঢাকা, ২ নভেম্বর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের ১০৫ বছর বয়সী এক নারীর চেষ্টায় ধামতারি নামের একটি জেলার লোকজনের খোলা মাঠে মলত্যাগের দীর্ঘদিনের অভ্যাস পুরোপুরি দূর করা সম্ভব হয়েছে।
কুনওয়ার বাই যাদব নামের এই বৃদ্ধা তার নিজের একমাত্র সম্পদ কয়েকটি ছাগল বিক্রি করে গ্রামে একটি টয়লেট বানিয়ে দিয়েছিলেন।
কোটাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এই কুনওয়ার বাই যাদব। গ্রামটি ছত্তিশগড়ের রাজধানী রাইপুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে।
টয়লেট বলে যে একটা জিনিস আছে তা এই নারী জানতে পারেন গত বছর। তার আগে তিনি তার শত বছরের জীবন কাটিয়েছেন জঙ্গলে-মাঠে মলত্যাগ করে।
দুই বছর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ সালের মধ্যে সব বাড়িতে টয়লেট প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি ঘোষণা করলে সরকার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে কর্মকর্তাদের পাঠায় – যারা লোকজনকে টয়লেট ব্যবহারের সুফল সম্পর্কে সচেতন করেন।
এক হিসেব অনুযায়ী ভারতে ৫৫ কোটি লোক উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ভারতে এর চেয়েও বেশি লোক মোবাইল ফোনের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
কুনওয়ার বাই বলেন , ‘জেলা কালেকটরের মুখে টয়লেটের কথা শুনে আমি প্রথম এ সম্পর্কে জানতে পারি। শুনে মনে হলো, আমাকে যেভাবেই হোক বাড়িতে একটা টয়লেট বানাতেই হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে কোন টাকা ছিল না। তাই ছাগল বিক্রি করে আর পুত্রবধূর কাছ থেকে কিছু সাহায্য নিয়ে মোট ২২ হাজার টাকা তুলি। ১৫ দিনের মধ্যে টয়লেট তৈরি হয়ে গেল। এর পর সারা গ্রামে এটা আলোচনার বিষয়ে পরিণত হলো। আশপাশের গ্রাম থেকে লোকেরা টয়লেট দেখতে এলো। তারা আবার অনেকে নিজেরা বাড়িতে টয়লেট বানাতে শুরু করলো। মাত্র এক বছরের মধ্যে গ্রামের সব বাড়িতে টয়লেট তৈরি হয়ে গেল।’
সারা গ্রাম, এমনকি গোটা রাজ্যের জন্যই এভাবে কুনওয়ার বাই দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। এ জন্য তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদকও পেয়েছেন এ বছর।
আর এই পদক নেবার জন্যই তিনি জীবনের প্রথম গ্রামের বাইরে অন্য কোথাও গেলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথেও দেখা হয়েছে তার।
‘টয়লেট বিপ্লব’ ঘটানোর জন্য তিনি এখন ছত্তিশগড়ে বিখ্যাত হয়ে গেছেন।