রাজনীতি

সন্ত্রাসীদের জনগণই প্রতিহত করবে: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা, ৩ নভেম্বর, (ডেইলি টাইমস ২৪):

আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারাই জনগণকে পোড়াবে জনগণই তাদেরকে প্রতিহত করবে’।

জানুয়ারি থেকে মার্চ সরকার পতনের আন্দোলনের নামে টানা ৯২ দিন বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তখন বেগম জিয়া বলেছিলেন, সরকার উৎখাত না করে নাকি ঘরে ফিরবেন না, সরকার উৎখাত করতে পারেনি। জনগণই ঠেকিয়েছিল তাদেরকে। যারাই জনগণকে পোড়াবে জনগণই তাদেরকে প্রতিহত করবে। ভবিষ্যতেও তাদেরকে জনগণই ঠেকাবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ মিলনায়তনে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটা কথায়ই বিশ্বাস করি, আমরা স্বাধীনতা এনেছি। এই স্বাধীনতাকে আমাদের অর্থবহ করতে হবে। জাতির পিতাকে হত্যা করে জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করে, হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে হত্যা করে তারা ভেবেছিল আওয়ামী লীগের নাম-নিশানা মুছে দেবে। কিন্তু এদেশের মাটি ও মানুষের কথা বলার মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ সংগঠনটা চলে।

শেখ হাসিনা দৃঢ় কন্ঠে বলেন, ‘এটা কোনো উড়ে এসে জুড়ে বসা অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর দল নয়, এই দলের শিকড় বাংলার মাটিতে প্রোথিত। এই দল আওয়ামী লীগকে হাজারো ষড়যন্ত্র করেও কেউ কোনদিন নিশ্চিহ্ন করতে পারে নাই। ইনশাল্লাহ আগামীতেও পারবে না’।

প্রধানমন্ত্রী বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তারা ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে এবং খালেদা জিয়া নিজেই নির্বাচনে আসে নাই। রাজনীতিতে ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত তাদেরকেই (সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল) দিতে হয়।’

‘অথচ খালেদা জিয়া তার ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রতিশোধ নিতে গেল জনগণের ওপর। জনগণ কেন ভুলের খেসারত দেবে,’ প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।

স্মরণ সভায় জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও ড. আব্দুর রাজ্জাক বক্তৃতা করেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের পরিচালনায় স্মরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন- আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজউদ্দিন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি এবং মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণ ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও সাদেক খান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্টের শহীদ, প্রয়াত জাতীয় চারনেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করব, এই স্বাধীনতার ইতিহাস, আমাদের অর্জনের ইতিহাস, গৌরবের ইতিহাস, বিজয়ের ইতিহাস- যে ইতিহাসকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল তা আগামী প্রজন্মের সবাই যেন জানতে পারে। নিজেদেরকে গড়ে তুলতে পারে। সেইভাবেই আমাদেরকে কাজ করে যেতে হবে। জাতির পিতা এই দেশ দিয়ে গেছেন আমরা বিশ্ব সভায় এই দেশকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে চাই। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী যে চেতনা জেগে উঠেছে তাকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি তার জঙ্গিবিরোধী অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘দেশে কোন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থাকতে দেব না এবং তাদের মদদকারিরাও সাজা পাবে।’

এ প্রসঙ্গে তিনি সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের টেস্ট জয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা যে পারি এটাও তার একটা নমুনা। আমরা জোর প্রচেষ্টা নিলে বিশ্বের সেরাদেরকেও পরাভূত করতে পারি।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button