
কুনিও হোশি হত্যা: সাতদিনের রিমান্ডে ৪ জেএমবি
ঢাকা, ৬ নভেম্বর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি এবং খাদেম রহমতুলাহ হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামিসহ জেএমবির ৪ সদস্যকে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার দুপুরে এই চার আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে প্রত্যেককে সাতদিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম শফিউল আলম।
রিমান্ডপ্রাপ্তরা হলেন পীরগাছা উপজেলার দুর্গাচরণ গ্রামের মৃত জয়নুদ্দিনের ছেলে বেলাল হোসেন (৪৬), একই উপজেলার পশুয়া টাঙ্গাইল পাড়া গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে এরশাদ আলম (২৮) ও মনতাজুর রহমানের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৩) এবং পশুয়া খাঁপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে আল-আমিন (২০)।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন জানান, রোববার সকালে কোতোয়ালি থানার এসআই আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেন। সন্ধ্যায় পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানির শেষে বিচারক সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রোববার রংপুরের শাহাবাজপুরে পরিত্যক্ত একটি ইট ভাটায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করাহয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় পিস্তলসহ দুইটি চাপাতি, একটি চাইনিজ কুড়াল ও তিনটি ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, রংপুরে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনায় গোপন বৈঠক করার সময় ওই আস্তানায় পুলিশ অভিযান চালালে জেএমবি সদস্যরা ককটেল নিক্ষেপ করে। এতে চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে এসময় প্রায় ৬ রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
রংপুর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম জাহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের মধ্যে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যা মামলার আসামি রয়েছেন।
গত বছরের ৩ অক্টোবর রংপুর নগরীর অদুরে কাউনিয়ার আলুটারিতে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে তিন দুর্বৃত্ত মোটর সাইকেলে এসে গুলি করে হত্যা করে। হত্যার পর পরই কুনিও’র ব্যবসায়িক পার্টনার হুমায়ুন কবির হিরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে এ মামলায় বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুন্নবী খান সোহেলের ছোট ভাই রাশেদুন্নবী খান বিপ্লবকে রংপুরের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে গত ১২ নভেম্বর রংপুর মহানগর যুবদলের সদস্য রাজিব হাসান সুমন ওরফে মেরিল সুমন, যুবদলের সদস্য জুম্মাপাড়ার নওশাদ হোসেন রুবেল ওরফে কালা রুবেল এবং শালবন এলাকার কাজল চন্দ্র বর্মণ ওরফে ভরসাকে র্যাব সদস্যরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে। তাদের কুনিও হত্যার আসামী দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয় এবং রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
পরে রংপুরের পীরগাছা থেকে জেএমবির সামরিক শাখার নেতা মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে কুনিও হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনাও দেন মাসুদ রানা। মাসুদ রানা কিভাবে কুনিওকে হত্যা করেছে, কারা কারা তার সাথে ছিল, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল কারা সরবরাহ করেছে এসব তথ্য তিনি জবানবন্দিতে জানান।
জবানবন্দিতে রানা জানান, তিনি নিজেই কুনিওকে গুলি করে হত্যা করেন। তার সঙ্গে এসাহাকসহ আরও একজন ছিল।
হত্যাকাণ্ডের প্রায় নয় মাস পর আট জেএমবি সদস্যকে অভিযুক্ত করে এ বছরের ৭ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়।