
সংখ্যালঘুর ১০ কোটি টাকার সম্পদ দখল আ’লীগ নেতার
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
প্রধান বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আপিল বিভাগের রায়কে উপেক্ষা করে ফেনীর দাগনভূঞায় সংখ্যালঘুর বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়ে ১০ কোটি টাকার সম্পদ দখল করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবদিন মামুন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি রাতের আঁধারে বাড়িঘর ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে ফেনী শহরের সহদেবপুর এসে আশ্রয় নিয়েছে।
মঙ্গলবার দাগনভূঞার আমানউল্লাহপুরের ক্ষতিগ্রস্ত পলাশ চন্দ্র সাহা ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে নিরাপত্তার দাবি করেছেন। সূত্র জানায়, আমানউল্লাহপুরের ক্ষিতিশ চন্দ্র সাহার পালক ছেলে পলাশ সাহা পৈতৃক ১১ শতক ভূমির ওপর পাকা ইমারত নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। বোন শিমুল রানী সাহা ১৯৯৩ সালে ফেনীর সহকারী জজ আদালতে পলাশ চন্দ্র সাহার ওই জমির বৈধতা নিয়ে মামলা করেন। তৎকালীন সহকারী জজ বিনয় কুমার মজুমদার পলাশ সাহাকে ওই সম্পত্তির মালিকানার বৈধতা দিয়ে রায় দেন।
ক্ষিতিশ সাহার মৃত্যুর পর শিমুল রানী এ নিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি করতে চাইলে মা গৌরি রানী সাহা ২০০০ সালে পলাশ সাহার পক্ষে ফেনী জেলা জজ আদালতে মামলা করলে বিচারক ২০১৫ সালের ২২ মে পলাশের পক্ষে আবার মামলার রায় দেন। এরই মধ্যে শিমুল রানী ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবদিন মামুনের কাছে অবৈধভাবে বিক্রির জন্য ওই জমি বায়নাপত্র করেন। প্রকৃতপক্ষে শিমুল রানী ওই জমির বৈধ কোনো মালিক না হলেও দাগনভূঞা ভূমি অফিস থেকে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শিমুল রানীর দুই ছেলের নামে প্রভাব খাটিয়ে নামজারি খতিয়ান তৈরি করে নেয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবিদন মামুন দাগনভূঞা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে পর পর তিনটি ভুয়া বায়না দলিল প্রভাব খাটিয়ে রেজিস্ট্রি করে নেন। এ ঘটনায় পলাশ সাহা ২০১৪ সালের জুনে উচ্চ আদালতে মামলা করেন। আদালত তার মামলাটি গ্রহণ করে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ ওই ভূমির বিষয়ে যাচাই-বাছাই শেষে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল স্থিতাবস্থা জারি করেন।
স্থিতাবস্থা জারির সংবাদ শুনে আওয়ামী লীগ নেতা রাতের আঁধারে হামলা চালিয়ে পলাশ সাহা ও তার পরিবারের সদস্যদের জোর করে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে। সংখ্যালঘু পরিবারটি প্রাণের ভয়ে শহরে এসে আশ্রয় নেয়। এ সুযোগে আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদিন মামুন পাকা বাড়িটি গুঁড়িয়ে দিয়ে গাছ-পালা কেটে নিয়ে বাড়ির নিশানা মুছে দেন। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এ আওয়ামী লীগ নেতা ওই ভূমিতে বহুতল ইমারত নির্মাণের জন্য দাগনভূঞা পৌরসভা থেকে প্ল্যান পাস করিয়ে নিয়ে কাজ শুরু করেন।