
‘যেখানে পাওয়া যাবে মেরে লাশ গুম করে দেওয়া হবে’
ঢাকা,০৪ মে, (ডেইলি টাইমস ২৪):
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের পৌরসভা এলাকার এক পরিবারের ওপর চলছে ক্রমাগত নির্যাতন। একেরপর এক হামলা ও মারপিট করে ওই পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দিচ্ছে প্রতিপক্ষ। এ বিষয়ে স্থানীয় ফুলমিয়া, রেজিনা,বিলকিছ, বাবুল্লা, কামালসহ ১১ জনকে আসামি করে গত ২৪ এপ্রিল দিনাজপুর জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় বাবু নামের এক যুবক আয়েশা বেগমের মেয়ে রোকসানাকে ফুসলিয়ে বিয়ে করেন। এরপরে তাকে হিলি সীমান্তে দিয়ে ভারতে পাচার করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। রোকসানার খোঁজ জানতে চাওয়ায় ওই পরিবারের ওপর একের পর হামলার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে মামলা দায়ের করলে আসামিরা সবাই খালাস পেয়ে এসে ফের একেরপর এক হামলার ঘটনা ঘটায়। এ বিষয়ে দিনাজপুরের আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে।
সম্প্রতি দায়ের করা মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, তিন বছর আগে ব্যবসার কাজে পার্বতীপুরের বাইরে যাচ্ছে বলে স্ত্রী রোকসানাকে নিয়ে হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে দেয়। গত বছর বাবু ফিরে এলে রোকসানার মা, মেয়ে রোকসানার খবর জানতে চাইলে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পূর্বের ওই ঘটনায় একটি দায়ের করা মামলায় আসামিরা খালাস পেয়ে যায়। এরপর থেকেই আসামিরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
গত ২১ এপ্রিল রেল ওয়ে বাজারের নিকট আয়েশার ছোটবোন সোহাগী বেগম বাজার করতে যাওয়ার তাকেও মারধর ও শ্লীলতাহানি করা হয়। এসময় আসামিরা প্রকাশ্যে চিৎকার করে বলে ‘শালীকে মেরে লাশ গুম করে দাও। ‘ এসময় সোহাগীর স্বামী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করলে পুরো পরিবারকে আসামিরা হুমকি দিয়ে যায়, যেখানে তাদের পাওয়া যাবে মেরে লাশ গুম করে দেওয়া হবে। পরে সোহাগী বেগম বাদী হয়ে দিনাজপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর সোহাগী, আয়েশাসহ আলাউদ্দিন মিয়ার পরিবারের ওপর নতুন উদ্যমে নির্যাতন শুরু হয়। সোহাগীর স্বামী জাহিদুলের রিকশাভ্যান চুরি করে তাকে মারধর গুরুতর আহত করা হয়। জাহিদুলকে স্থানীয় থানা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে ২৫ এপ্রিল নিরাপত্তা চেয়ে পার্বতীপুর রেলওয়ে থানায় আসামিদের ‘ভয়ঙ্কর প্রকৃতি’র উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, পুলিশ ঘটনা তদন্ত করতে গেলে আসামিরা তিন পুলিশ সদস্যকেও মারপিট করে। পরে পুলিশের সাথেও বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এমন অবস্থায় সোহাগী বেগম সাংবাদিকদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সোহাগী বেগম বলেন, ‘ফুলমিয়া, বাবুল্লা, বাবুরা আমাদের বাড়ির পাশেই থাকে। প্রতিমুহূর্তে আমরা আতঙ্কে আছি। আমার বোনকে মেরেছে, আমাকে মেরেছে, আমার স্বামীর পা ভেঙে দিয়েছে। আমাদেরকে ক্রমাগত মেরে ফেলে গুম করার হুমকি দিচ্ছে। পুলিশও তাদের কাছে অসহায়। এমন অবস্থায় আমি কার কাছে যাবো, কার কাছে বিচার পাবো?’