জেলার সংবাদ

প্রেমের টানে থাই কন্যা নওগাঁয়

ঢাকা,১৮ মে, (ডেইলি টাইমস ২৪):

প্রেমের টানে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন সুপুত্তো ওরফে ওম (৩৬)। ভালবেসে বিয়েও করেছেন সেলফোন মেরামতকারী অনিক খান (২৩) নামের এক যুবককে। বুধবার বিকেলে নাটোর আদালত চত্বরে তারা বিয়ে করেছেন। অনিক নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের আমজাদ খানের ছেলে।
বুধবার বিকেলে আদালত চত্বরে সুপুত্তো সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমাদের সমাজে বহু বিয়ে একটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি এটা পছন্দ করি না। তাই বিয়ে করছিলাম না। হটাৎ করে ফেসবুকে অনিকের সাথে পরিচয় হয়। ওর সরলতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। ধীরে ধীরে ওর প্রতি আমার আস্থা জন্মেছে। আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। ওকে শুধু আমার করে নেওয়ার জন্য বার বার এ দেশে ছুটে এসেছি। এবার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি এখন দারুণ সুখী।
সুপুত্তো জানান, তার বাড়ি থাইল্যান্ডের চো-অম জেলার পিচচোবড়ি এলাকায়। বাবা উইছাই ও মা নট্টাফ্রন। দু’জনই আলাদা থাকেন ভিন্ন ভিন্ন দেশে। তিনি পড়ালেখা শেষ করে প্রথমে ব্যাংকে চাকুরী করতেন। বর্তমানে ফাস্টফুডের ব্যবসা করেন। বন্ধুবান্ধবরা সবাই বিয়ে করেছেন। তারা বহুবিবাহে আসক্ত হয়েছেন। এটা তার ভালো লাগছিলো না। এই কারণে তিনি বিয়ে করেন না।
দোকানে বসে ফেসবুক ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে বাংলাদেশের ২২ বছরের তরুণ অনিক খানকে বন্ধুত্বের প্রস্তাব পাঠান। অনিক প্রস্তাব সমর্থন করলে তাদের মধ্যে চেনা-জানা শুরু হয়। ফোনে কথাবার্তাও চলতে থাকে। তারা পরস্পরকে ভালোবেসে ফেলেন। শুধু কথা বলার সীমাবদ্ধতা তাদের অস্থির করে তুলে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাবা-মার অনুমতি নিয়ে বন্ধুর টানে ছুটে আসেন বাংলাদেশে। বিমানবন্দরে অনিককে দেখে তাকে ওঁর আরও ভালো লাগে। অনিকের পরিবারের সাথে দেখা করে সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু অনিকের পরিবার তাতে সাড়া দেয় না। তবে অনিক ও তার পরিবারের সদস্যদের আদর অপ্যায়নে সে মুগ্ধ হয়। মাত্র পাঁচ দিনের ভিসা নিয়ে আসায় তড়িঘড়ি করে পুনরায় দেশে ফিরে যান। বলে যান, ছয় মাস পর আবার আসবেন। কিন্তু ছয় মাস অপেক্ষা করতে পারেননি।
এ মাসের প্রথমদিকে তিনি আবারও অনিকের কাছে ছুটে এসেছেন। বিয়ে করার জন্য অনিকের পরিবারের সদস্যদের হাতে-পায়ে ধরেছেন। দিনের পর দিন কান্নাকাটি করেছেন। না খেয়ে অনশন পর্যন্ত করেছেন। অবশেষে গত বুধবার তারা ধর্মীয় ও হলফনামামুলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। বর্তমানে তার নাম সুফিয়া খাতুন।
অনিক খান জানান, পড়ালেখা তেমন একটা করেননি। তবে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজি বলতে ও লিখতে পারেন। সেখানে তার একটা মুঠোফোন মেরামতের দোকান রয়েছে। দোকানে বসে অলস সময় কাটাতে গিয়ে ফেসবুকে সুপুত্তোর সাথে ওর পরিচয় হয়। এখন তারা এক অপরের সাথে সব সময় যোগাযোগ না রেখে থাকতে পারেন না। ধর্ম ও রাষ্ট্রের আইনকানুন মেনে তাঁরা সুখের সংসার গড়তে চান। অনিক বলেন, সুফিয়া আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমি ওর সঙ্গে সারা জীবন থাকতে চাই।
Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button