
কর আদায় প্রক্রিয়াকে সহজবোধ্য করতে হবে : ফরাসউদ্দিন
ঢাকা,২৫ মে, (ডেইলি টাইমস ২৪):
নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও কর আদায় প্রক্রিয়া এখনও জটিল মনে করছেন সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, “কর কম হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ কর আদায় প্রক্রিয়া খুবই জটিল। এটাকে অবশ্যই সহজবোধ্য করতে হবে, বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে হবে এক্ষেত্রে। ” আজ বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম, বাংলাদেশের দ্বাদশ বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, “এ তো কঠিন কিছু নয়। যদি জনগণ, সরকার ও কর আদায় নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিলে এটা সুন্দরভাবে করা সম্ভব। ”
এ সময় তিনি ২০২৫ সালে বাংলাদেশের দ্বিগুণ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগে ৪০ শতাংশ জিডিপি অনুপাত অর্জন এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ জিডিপির বিপজ্জনক সীমা অতিক্রম করার পূর্বাভাস মাথায় রেখে নীতি প্রণয়নের পরামর্শ দেন।
ফরাসউদ্দিন বলেন, “সেজন্য সরকারকে তার প্রাথমিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। এমন নীতি প্রণয়ন করতে হবে, যা সব বিনিয়োগকারীকে উৎসাহিত করবে, বিশেষ করে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের। যখন তারা বিনিয়োগে নেমে পড়বে, তখন অন্যরা তাদের অনুসরণ করবে। ”
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, বেসরকারি খাত বাংলাদেশকে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় সর্বনিম্ন ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত হওয়া থেকে মুক্তি দিতে পারে। যা বর্তমানে বাংলাদেশে ১০ শতাংশের বিপরীতে নেপালে ১৭ শতাংশ ও ভারতে ২৭ শতাংশ।
এ ছাড়াও দ্রুত অগ্রসরমান চীন ও ভারতের অর্থনীতির সঙ্গে মিলে নিজেদের উন্নতি বাড়ানোর পরামর্শও দেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, “দুই দশক সময়ে চিন্ডিয়াতে (চীন ও ভারতের সমন্বিত রূপ) পৃথিবীর জিডিপির ৫০ শতাংশ থাকবে। এটা সব ধরনের পূর্বাভাসেই এমনটা মেলে। তার মানে উন্নয়ন, সমৃদ্ধ ও সামাজিক অগ্রগতির জন্য এশিয়ার দিকে তাকাও। বাংলাদেশও এ দুটি বড় অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির চাপে স্যান্ডউইচ হয়ে থাকবে না। ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা তাদের কাছ থেকে সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের ভাগিদার হতে পারি। ”
একই সঙ্গে ভারতসহ উন্নয়ন অংশীদার পাঁচ দেশের ৪ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের উপর নির্ভরযোগ্যতার প্রকাশ বলে মনে করেন ফরাসউদ্দিন।
তা ছাড়াও বেসরকারি খাতের সক্রিয়তার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “যখন বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘আমরা রাজস্ব ব্যবস্থা করি’, আপনারা সেটা করে থাকেন তা ঠিক, কিন্তু সেটা কি ১৬ কোটি মানুষের জন্য যথেষ্ট?”
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম, বাংলাদেশের সভাপতি হাফিজুর রহমান খান, সাবেক সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।