রাজনীতি

দুর্নীতির কারণেই গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে সরকার : ফখরুল

ঢাকা, ১ জুন, (ডেইলি টাইমস ২৪):

‘জ্বালানি খাতে দুর্নীতির কারণেই সরকার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতের রায়ে গতকাল মঙ্গলবার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত হয়ে যায়। ফলে ১ জুন থেকে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে কোনো বাধা থাকল না বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি)।

আদালতের ওই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে এক প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল এ অভিযোগ করেন। রাজধানীর উত্তরার আমিন কমপ্লেক্স সংলগ্ন সড়কে স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে দুস্থদের মধ্যে বস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী বিরতণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন খালেদা জিয়া। এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রসঙ্গত, গ্যাসের প্রথম দফায় ১ মার্চ থেকে বর্ধিত মূল্য কার্যকর হয়। মূল্যবৃদ্ধির পর এক চুলার গ্যাসের মূল্য ৬০০ থেকে বেড়ে হয় ৭৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা নির্ধারণ হয়। দ্বিতীয় দফায় জুন থেকে এ মূল্য বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ৯০০ ও ৯৫০ টাকা।

দ্বিতীয় দফায় জুন থেকে গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার পর্যায়ক্রমে জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, তেলের দাম বাড়িয়েছে। বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, তখনও এরা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্বালানি খাতের দুর্নীতি বাড়ানো।

‘কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে শুরু করে অন্যান্য খাতে দুর্নীতির কারণে প্রচুর পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তা কাভার করার জন্য জনগণের পকেট কেটে, জনগণ থেকে বেশি দাম নিয়ে সেটা পূরণ করতে চাইছে। আমরা তখনও এর নিন্দা করেছি, এখনও করছি।’

উচ্চতর আদালতের রায়ের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি আবার চালু হয়েছে। এ রায়ের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে জনগণ যে ভোগান্তি পোহাচ্ছে, জনগণর আয়ের ওপরে যে চাপ পড়ছে, জনগণের প্রকৃত আয়টা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে, আজ এটাই প্রমাণিত হয়েছে।’

মঙ্গলবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতির আবেদন) প্রাথমিক শুনানি করে চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাইকোর্টের আদেশ সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করে নিয়মিত শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন।

মঙ্গলবার রায় ঘোষণার পর অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, চেম্বার আদালতের এ আদেশের ফলে ১ জুন থেকে দ্বিতীয় দফায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকরে বাধা নেই। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন  (বিইআরসি) গৃহস্থলী ও গাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়িয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেয়।

সরকারের দাবি করা অর্থনৈতিক অগ্রগতির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির শ্লোগান, এটা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা, বানোয়াট শ্লোগান এবং সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে। জনগণকে একেবারে জিম্মি করে তাদের পকেট কেটে বড় বড় বাজেট তারা দিচ্ছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রবৃদ্ধির বিষয়ে আমরা বারবার বলছি, বিশ্বব্যাংক যে প্রবৃদ্ধির হার বলেছে, সেই হারের সঙ্গে সরকারের প্রবৃদ্ধি অনেক কম অর্থাৎ বিশ্বব্যাংক বলেছে,  ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। আর সরকার বলছে সেটা ৭ এর ওপরে হবে। কিন্তু তা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাল (১ জুন, বৃহস্পতিবার) যে বাজেট দেয়া হবে, সেই বাজেটের আকার অনেক বড়। বরাবরই তারা বড় করে চলছে। এর উদ্দেশ্য একটাই, তারা ফাঁপা একটা আওয়াজ তৈরি করে।

‘গত বাজেটের ৫৫ শতাংশ এখন পর্যন্ত তারা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এখন আবার বড় বাজেট দেয়ার অর্থ হচ্ছে, তারা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তারা মানুষকে বোকা বানিয়ে বলবে, আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতি অনেক বেশি করছি। এটাই মূল উদ্দেশ্য।’

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, তারা তো বলবেনই। কারণ মামলাগুলো থাকলে উনাদের তো সবচেয়ে সুবিধা হয়। আমাদের জেলে ভরে রাখলে, উনাদের ফাঁকা মাঠে গোল দিতে সুবিধা হয়।

তিনি বলেন, নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও অবাধ করতে হয়, তাহলে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের এবং কর্মীদের মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button