
খেলাধুলা
বিকেলে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড
ঢাকা, ০৯ জুন, (ডেইলি টাইমস ২৪):
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ শুক্রবার কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনসে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। সোফিয়া গার্ডেনে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩.৩০ মিনিটে।
কার্ডিফের এই সোফিয়া গার্ডেনসেই ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মতো হারায় বাংলাদেশ। রিকি পন্টিং-গ্লেন ম্যাকগ্রাদের সেই প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়া। সেই তুলনায় এই নিউজিল্যান্ড শক্তিমত্তায় অনেকটাই পিছিয়ে। সেদিন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভয়ঙ্কর দল হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার যখন নিউজিল্যান্ডের মোকাবেলা করতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ, তখন ঘুরে ফিরেই আসবে এক যুগ আগের স্মৃতি। আর শেষ চার নিশ্চিত করতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর কোনো বিকল্পও নেই বাংলাদেশের সামনে। আর সেটা করতে হলেও ভয়ঙ্কর দলই হয়ে উঠতে হবে বাংলাদেশকে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হওয়ায় এক পয়েন্ট পায় বাংলাদেশ। আর সেই একটা পয়েন্টই সেমিফাইনালে ওঠার পথ খোলা রেখেছে বাংলাদেশের। তবে, এর জন্য শুধু নিউজিল্যান্ডকে শুক্রবার হারালেই চলবে না, শনিবার অস্ট্রেলিয়াকে হারতে হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
এর সাথে আছে রানরেটের হিসাব-নিকাশও। যদিও, বাংলাদেশ সেমিফাইনালের চাপ নিচ্ছে না আপাতত। জয় নিশ্চিত করা নিয়েই মাশরাফি বিন মুর্তজার দলের যত ভাবনা। এই প্রসঙ্গে তামিম ইকবাল বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটা পয়েন্টের কারণেই আমরা সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারছি, যদি আমরা এই ম্যাচ জিততে পারি এবং ওখানে একটা দল হারে। তবে আমরা কতটুকু যাব বা সেমি-ফাইনালে উঠতে পারবো কি-না, এসব না ভেবে যদি পরের ম্যাচটি নিয়ে ভাবি, সেটাই কাজে লাগবে। সেমির কথা চিন্তা না করে ম্যাচটায় মন দিতে হবে আমাদের। ম্যাচটা জিততে হবে। জয়ের জন্য যা ঠিক ঠিক করা দরকার, সব করতে হবে। ওটা নিয়েই আমরা বেশি ভাবছি। এক ধাপ এগিয়ে ভাবতে চাই না।’
কার্ডিফে নিজেদের অতীত রেকর্ড বাদেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আশাবাদী হওয়ার আরো কারণও আছে বাংলাদেশের। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে জিম্বাবুয়ের পরই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই দলটার বিপক্ষেই অবশ্য গত ত্রিদেশীয় সিরিজে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে নিউজিল্যান্ডকে পাঁচ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও সেই ম্যাচে মার্টিন গাপটিল, কেন উইলিয়ামসন, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট ও অ্যাডাম মিলনেরা ছিলেন না।
তামিম এই প্রসঙ্গে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে দুইবার হোয়াইটওয়াশ করার স্মৃতি টেনে আনলেন, ‘আমরা ওদের শক্তিশালী দলটাকে দেশের মাটিতে হারিয়েছি। হয়তো ওরা আয়ারল্যান্ডে শক্তিশালী দল পাঠায়নি। আমরা ওদের বিপক্ষে ভাল করেছি। তবে, এবার ওদের দলটা অনেক শক্তিশালী। সিরিয়াস লেভেলের কিছু খেলোয়াড় ওদের আছে। আবারো আগের ফলাফলের পুনরাবৃত্তি করতে হলে আমাদের সেরা খেলার কোনো বিকল্প নেই।’
আগের দিন সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, নিউজিল্যান্ড চেনা প্রতিপক্ষ বলেই জয়ের আশা জোর দিয়ে করতে পারছে দল। তামিমের কণ্ঠেও শোনা গেল একই আত্মবিশ্বাসের সুর। তিনি বলেন, ‘এমন একটা দলের সাথে খেলা যাদের দেশ ও বিদেশ দুই জায়গায়ই হারিয়েছি। আমরা তাই বেশ আত্মবিশ্বাসী। যদি একটা দল হিসবে খেলতে পারি আমরা, তাহলে আমাদের সুযোগ থাকবে।’
আর দলের জয় আনার জন্য বড় একটা ভূমিকা পালন করতে হবে এই তামিমকেই। এই টুর্নামেন্টে তামিম বাংলাদেশের তো বটেই, নিজেকে বৈশ্বিক বিবেচনাতেও সেরাদের সেরা বলেই প্রমাণ করেছেন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৮ ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯৫- দুইটি ভিন্ন পরিস্থিতিতে এসেছে তামিমের এই দুই ইনিংস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আউট হয়ে যাওয়ার পরও আরো অনেকগুলো উইকেট হাতে ছিল। স্কোরও ৩০০ ছাড়িয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ‘টপ এজ’ পুলে মিশেল স্টার্কের বলে ক্যাচ তুলে দেওয়ার ১৪ বলের মধ্যে অল-আউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
একই বিপর্যয় রোজ রোজ আসবেন না বলেই বিশ্বাস করছেন তামিম ইকবাল। তিনি বলেন, ‘আমাদের দক্ষ ব্যাটসম্যান আছেন যারা এখনো জ্বলে উঠতে পারেননি। সবাই নিজেদের প্রমাণ করেই এসেছেন। তারা একই কাজটা ভবিষ্যতেও করবেন। মাত্র একটা ইনিংসের মামলা। যদি কয়েকজন ব্যাটসম্যান নিয়মিত রান পাওয়া শুরু করেন তাহলে কিন্তু আমরা খুব ভয়ঙ্কর দল হয়ে উঠবো।’
বাংলাদেশ কী আজ পারবে ‘ভয়ঙ্কর’ দল হয়ে উঠতে?