
মধ্যবিত্তের কাঁধে করের বোঝা!
ঢাকা, ১৩ জুন, (ডেইলি টাইমস ২৪):
নানা ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতি হচ্ছে। কিন্তু মধ্যবিত্ত বিশেষ করে নিন্ম মধ্যবিত্তের অবস্থা সঙ্গীন। তারা যে তিমিরে ছিল রয়ে গেছে সেখানেই। বরং দিন যত যাচ্ছে তাদের অবস্থা যেন আরো খারাপ হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। বাড়ছে বিদুৎ, গ্যাস, তেলের দাম। এমনি তাদের টেকা দায়। মূল্যবৃদ্ধির চাপে তারা আরো সহায়।
দুঃখজনক হচ্ছে, এরপরও যত ধরনের চাপ আছে সব যায় এই মধ্যবিত্তের ওপর দিয়েই। এবারের বাজেটেও ট্যাক্স বা ভ্যাটের খড়গ তাদের ওপরই পড়েছে। দূরে যাতায়াতের জন্য বাস, লঞ্চ বা রেলগাড়িতে উঠতে গেলেই এবার ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে তাদের। এছাড়া ১ জুলাই থেকে সব ধরনের চায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। দেশি ব্র্যান্ডের কাপড়চোপড়ে এত দিন ভ্যাট ছিল ৪ শতাংশ, এখন তা হচ্ছে ১৫ শতাংশ।
এই রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স অবশ্যই অপরিহার্য। কিন্তু সেসবের চাপ কেন শুধু মধ্যবিত্তের ওপরই পড়বে। মধ্যবিত্ত দেশীয় বাজার থেকে কেনাকাটা করে। আর উচ্চবিত্ত কেনে বিদেশ থেকে। ফলে তাদের ভ্যাট বাংলাদেশ সরকার পায় না। এছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধির কথা বলে সবকিছুর দাম বাড়ানো হয়। কিন্তু বেসরকারিখাতে তো একই হারে বেতন-ভাতা বাড়েনি। এই মূল্যবৃদ্ধির যাঁতাকলে কেন তাহলে পিষ্ট হতে হবে তাদের?
ব্যাংকে এক লাখ টাকার বেশি জমা হলেই বর্ধিত আবগারি শুল্ক দিতে হবে। যারা অতিকষ্টে সামান্য কিছু সঞ্চয় করে তাদের ওপরও কেন এই জুলুম। যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করার কথা বলা হচ্ছে সেখানে কেন এই বৈষম্য। বেসরকারিখাতে কোনো পেনশন সুবিধা নেই। যেখানে রাষ্ট্রের আরো তাদের পাশে দাঁড়ানোর কথা উল্টো তাদের ওপর চাপানো হচ্ছে করের বোঝা। এটা জনকল্যাণকারী কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে না।
সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সব ক্ষেত্রে সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা। সেক্ষেত্রে সরকারের নীতির কারণে নিন্ম আয়ের লোকজনসহ অন্যরা বৈষম্যের শিকার হবে এটি মেনে নেয়া যায় না। আমরা চাই জনবিরোধী সব ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে আসবে। সব ধরনের বৈষম্য নিরসন করা হবে। বিশেষ করে বাড়তি ও অন্যায্য করের চাপে যেন নিন্ম আয়ের লোকজনকে পিষ্ট হতে না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।