
ওয়াশিংটনে বিএনপি নেতা জাহিদ গ্রেপ্তার
ঢাকা, ১৪ জুন, (ডেইলি টাইমস ২৪):
বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিচয়দানকারী জাহিদ এফ সর্দার সাদীকে গ্রেপ্তার করেছে এফবিআই। ক্রেডিট কার্ড মেশিনে ব্যাংকের সাথে অর্থ প্রতারণা ও চেক চুরির অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস ভবনের সামনে থেকে জাহিদকে গ্রেপ্তার করে এফবিআই। গ্রেপ্তারের পরপরই তাকে ফ্লোরিডার ওরলান্ডোতে অবস্থিত হাই সিকিউরিটি ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে।
তবে তিনি কারাগার থেকেই বিভিন্ন মহলের সাথে যোগাযোগ করে আইনি সহায়তার আবেদন করেছেন বলে সর্বশেষ খবরে জানা গেছে।
এও জানা গেছে, জাহিদ এফ সর্দার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হলেও তার পাসপোর্টও জব্দ করা হয়েছে।
একটি সূত্রের মতে, জাহিদ সর্দার দীর্ঘদিন থেকে নিউ ইয়র্কসহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। অনেকের ঘরেই তিনি অতিথি হিসেবে অবস্থান করেছেন। তবে কাউকেই তার ব্যক্তিগত সমস্যা বা ফেরারী হওয়ার বিষয়টি জানাননি। সূত্র মতে, জাহিদকে গ্রেপ্তারের পেছনে কলকাঠি নেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোন্দল কলহ।
জানা যায়, জাহিদ এফ সর্দার ফ্লোরিডার ওলান্ডোতে অবস্থানকালীন সময়ে সেখানে গ্যাস স্টেশনের ব্যবসা করতেন। এ সময় ব্যবসার নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড চেক মেশিনের সুবিধা নেন তিনি। ব্যবসার নামে তিনি ৫৪টি প্রতারণামূলক লেনদেন করেন।
ইউনাইটেড ষ্টেটস ডিষ্ট্রিক্ট কোর্ট মিডল ডিষ্ট্রিক্ট অব ফ্লোরিডা কর্তৃক আনীত ইনডাইক্টমেন্টে অভিযোগ করা হয়েছে, জাহিদ এফ সর্দার সাদি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত করতে বিভিন্ন ধরনের চক্রান্ত ও চুরির আশ্রয় নিয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- বাংকোন পপুলার পর্টোরিকো, ব্যাংক অব আমেরিকা, ফিফথ থার্ড ব্যাংক, ওয়াকোবিয়া ব্যাংক, ওয়াশিংটন মিউচুয়্যাল ব্যাংক, সান ট্রাস্ট ব্যাংক, ফার্স্ট প্রায়রিটি ব্যাংক এবং আরবিসি সেন্টুরা ব্যাংক। এসব ব্যাংকের মাধ্যমে ডিপোজিটকৃত চেক ও অর্থ ফেডারেল ডিপোজিট ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন, ম্যাককোয় ফেডারেল ক্রেডিট ইউনিয়ন এবং সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা এডুকেটর ক্রেডিট ইউনিয়ন শেয়ার ইন্সুরেন্স ফান্ড কর্তৃক ইন্সুর করা ছিল। এর প্রেক্ষিতে যেকোনো চেক জমা দিলেই তার বিপরীতে তাৎক্ষণিক নগদ অর্থ উত্তোলন সম্ভব হতো। ২০০৬ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত এই সুবিধায় তিনি ৫৪টি লেনদেন করেছেন, যার সবগুলোই ছিল প্রতারণামূলক। চেক জমা দিয়ে এর বিপরীতে তাৎক্ষণিকভাবে নগদ অর্থ উত্তোলন করলেও এসব একাউন্টে কোনো অর্থ ছিল না। যে সব চেক জমা দেওয়া হতো তার সবগুলো বাউন্স হয়েছে।
দীর্ঘ দুই বছরের এমন কর্মকাণ্ডে ৩৫ ডলার থেকে শুরু করে ২৫ হাজার ডলারের প্রতারণামূলক লেনদেন হওয়ার তথ্য প্রমাণ এফবিআইয়ের হাতে রয়েছে। প্রতারণামূলক অর্থের পরিমাণ বিশাল না হলেও এর অপব্যবহারের আধিক্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রশ্ন ও সন্দেহের উদ্রেক করে। যার প্রেক্ষিতে এফবিআই বিষয়টি তদন্তে শুরু করে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে প্যারোলে মুক্তি পান তিনি। এ সময় ষ্টেটের বাইরে যেতে অনুমতি ছিলো তার। পরবর্তীতে এটাকে হালকা করে প্রতি তিন মাস অন্তর প্যারোল অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, এর পরই তিনি প্যারোল অফিসারের সাথে সাক্ষাতের বিধান মেনে চলতে ব্যর্থ হন। এর প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে ফেডারেল কর্তৃপক্ষ ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। এর প্রেক্ষিতেই পলাতক আসামি হিসেবে তাকে দীর্ঘদিন খুজছিল এফবিআই।
সূত্র: ইউএস বাংলা