
আইন ও আদালত
সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ছাড়া বিচারকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত নয়
ঢাকা, ১৬ জুন, (ডেইলি টাইমস ২৪):
সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ব্যাতীত কোন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে অসদাচরণ, দুর্নীতি বা অন্য কোন অভিযোগ উত্থাপিত হলে তার প্রাথমিক তদন্ত বা অনুসন্ধান না করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এই নির্দেশনা লংঘন করে কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত বা অনুসন্ধান পরিচালনা করা হলে তা সুপ্রিম কোর্টকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নির্দেশে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর আইন ও বিচার বিভাগকে পরামর্শ দিয়ে এ সংক্রান্ত একটি পত্র দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ওই পত্রে বলা হয়েছিল, কোন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হলে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ ব্যাতিরেকে কোন তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা বাঞ্চনীয় নয়। কিন্তু বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্নীতি বা অন্য কোন অভিযোগ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই আইন ও বিচার বিভাগের নির্দেশে প্রাথমিক তদন্ত বা অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ছাড়া এ ধরনের প্রাথমিক তদন্ত বা যে কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্খিত, অগ্রহনযোগ্য এবং তা কোনভাবেই কাম্য নয়। পক্ষান্তরে এটা সংবিধানের ১০৯, ১১৬ ও ১১৬(ক) অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লংঘন বলে জারিকৃত সার্কুলারে বলা হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারকর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল-নির্ধারণ, পদোন্নতি দান ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলাবিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত এবং সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে তা প্রযুক্ত হয়। ফলে, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরি, নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলাবিধান, বিদেশ গমন ও চাকরির অন্য শর্তাবলী ইত্যাদি সব বিষয় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নির্ধারণ করা বাধ্যকর।
এ ছাড়া সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের হাতে ন্যাস্ত। সংবিধানের ১০৯, ১১৬, ১১৬(ক) অনুচ্ছেদ এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মাসদার হোসেন মামলার রায়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত জুডিশিয়াল সার্ভিস ও এই সার্ভিসের সদস্যদের অন্য সব সার্ভিস থেকে পৃথক এবং স্বাতন্ত্র্য করা হয়েছে। এ ছাড়া মাসদার হোসেন ও অন্যান্য মামলায় আপিল বিভাগ কর্তৃক বিচার কর্ম বিভাগে কর্মরত বিচারকগণের অন্যান্য সকল বিষয়ের পাশাপাশি শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়েও সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শের প্রাধান্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রলায়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সকল বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে এই সার্কুলার বিতরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলা হয়েছে।