
ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকল চাল সংকটের হোতারা
ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর,(ডেইলি টাইমস ২৪):
চাল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কারসাজি করে চালের বাজার অস্থির করার অভিযোগ তুলেছিল খোদ সরকারই। এমনকি এর হোতাদের গ্রেফতারও করার নির্দেশ এসেছিল। কিন্তু তাদের নিয়েই মঙ্গলবার সচিবালয়ে বৈঠক করলেন সরকারের তিন মন্ত্রী। আর বৈঠকে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিষয়ে জোরাল অবস্থান নেয়া তো দূরের কথা, উল্টো নতজানু হয়ে তাদের তিন দাবি মেনে নিয়েছেন মন্ত্রীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্য মিল মালিকরা ঘোষণা দিয়েছেন চালের মূল্য দুই থেকে তিন টাকা কমানোর। তবে ভোক্তা পর্যায়ে এ সুবিধা কতটুকু ও কবে মিলবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভোক্তাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিন্ডিকেটের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া ভালো দৃষ্টান্ত নয়। সরকারের সংশ্লিষ্টরা কখনোই দ্রব্যমূল্য নিয়ে কারসাজির হোতাদের শাস্তির মুখোমুখি করতে পারেনি। কোনো ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলেও গুরুদণ্ডের স্থলে দেয়া হয়েছে লঘুদণ্ড। এর ওপর এ সমঝোতা তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও উসকে দেবে।
মঙ্গলবারের এ বৈঠকে মন্ত্রীদের সঙ্গে রীতিমতো তর্কে জড়ান চাল মিল মালিক, ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা। মন্ত্রীদের চাপে ফেলে যে তিন দাবি তারা আদায় করে নিয়েছেন সেগুলো হল- চাল আমদানি ও পরিবহনে পাটের বস্তার পরিবর্তে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার, স্থলবন্দর দিয়ে চালবাহী ট্রাক দ্রুত পার এবং রেলপথে চাল আনার ব্যবস্থা করার নিশ্চয়তা।
জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বৈঠক শেষ করেই এ বিষয়ে এনবিআর, রেলপথ এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। ব্যবসায়ীদের যাতে হয়রানি না করা হয়, সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন। এতে ব্যবসায়ীরা খুশিতে টেবিল চাপরাতে চাপরাতে বিদায় নেন। আড়ালেই থেকে যায় চাল সিন্ডিকেটের দুই হোতা আবদুর রশীদ ও লায়েক আলী কিংবা এদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ যুগান্তরকে জানান, সরকার চালের মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে খুব সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। একই সঙ্গে ঠাণ্ডামাথায় ও গভীর বিচার-বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নিচ্ছে। জনগণের বৃহৎ স্বার্থে অনেক কিছুতেই নমনীয়তা দেখাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, সবাই দেশের নাগরিক। দেশের প্রতি ব্যবসায়ীদেরও দায়বদ্ধতা আছে। সরকার চায়, নিরাপদ স্তরে চালের মজুদ গড়ে ওঠুক। এজন্য সরকারিভাবে আমদানির পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাদের মজুদ পরিস্থিতি কেমন ও কী অভাব-অভিযোগ রয়েছে এবং কোথায় কী সংকট, তা জানার চেষ্টা করছে। সে লক্ষ্য নিয়েই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ বৈঠক করা হয়েছে। তিনি আশা করেন, সহায়ক সম্পর্ক ও সমঝোতার মাধ্যমে অনেক কঠিন পরিস্থিতিও স্বাভাবিক করা যায়। সরকার সে পদক্ষেপেই হাঁটছে।
খাদ্যমন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এ ছাড়া কিছু করার নেই।’ চালের বাজার অস্থিরতার পেছনে সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলেও তিনি মনে করেন।
সাবেক খাদ্য সচিব আবদুল লতিফ মণ্ডল যুগান্তরকে বলেন, চালের বাজার অস্থিরতার পেছনে চাল ব্যবসায়ীদের কারসাজি ও সরকারের ভুল নীতি দায়ী। হাওর এলাকায় অকাল বন্যা ও ব্লাস্ট রোগের কারণে ২০ লাখ টন কম হলেও পর্যাপ্ত বোরো উৎপাদন হয়েছে। সরকারের দাবিকেও একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাদের দাবি, অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে চালের বাজার অস্থির করেছে। এ কারণে কাউকে কাউকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আবার তাদের সঙ্গেই বৈঠক করে হয়রানি না করার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ চাল কারসাজির দায়ে অভিযুক্তরা পার পেল। শেয়ার বাজারেও তা-ই হয়েছে।
কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, কাকে ধরা হল, কাকে ছাড়া হল বা কার সঙ্গে বৈঠক করা হল- তার চেয়ে বড় কথা হল দেখতে হবে আসলেই দোষী কি না? দোষী হয়ে থাকলে ব্যবস্থা না নিয়ে একসঙ্গে বৈঠক করা অবশ্যই নিন্দনীয়। তিনি দাবি করেন, চাল নিয়ে অবশ্যই কারসাজি হচ্ছে। সেটা ব্যবসায়ীরাই করছে। সরকার এদের চিহ্নিত না করলে নিজেই ভাবমূর্তি সংকটে পড়বে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহারের কারণে এমনিতেই চালের মূল্য কেজিতে ২-৩ টাকা কমার কথা। কারণ চটের বস্তার দাম ৮০ টাকা। কিন্তু পলি-বস্তার মূল্য ১৫ টাকা। সুতরাং দু-তিন টাকা মূল্য কমানোর বিষয়টি কার্যত ফাঁকি।
চাল নিয়ে চালবাজি করছে মিলাররাই। এর ফলে কৃষকের ধান উৎপাদনের পর চাল ভোক্তাপর্যায়ে আসতে ১৩ হাত বদল হচ্ছে। ফলে ধাপে ধাপে কমিশন আর মুনাফার চাপে বাড়ছে চালের দাম। কারণ দেশে কৃষক এখন প্রায় ধানশূন্য। ফড়িয়ারা ওই ধান অনেক আগেই নামমাত্র দামে কিনে নিয়েছেন। তারা মাঠপর্যায়ের ধান সংগ্রহ করে সরবরাহ করেছেন স্থানীয় মহাজন বা প্রভাবশালী গোষ্ঠীর হাতে। এই মহাজনরা সংগৃহীত ধান তুলে দিয়েছেন হাস্কিং মিল মালিকদের হাতে। মিল মালিকরা সে ধান গুদামে অনির্দিষ্টকালের জন্য মজুদ হিসেবে ধরে রাখছেন। একই সঙ্গে বাজার পরিস্থিতি বুঝে তারা ধান থেকে চাল উৎপাদন করে বাজারে ছাড়ছেন। এ ক্ষেত্রে চালকল মালিকরাও আরও একধাপ এগিয়ে। ফলে হাস্কিং মিল, রাইস মিল কিংবা অটোরাইস মিল সর্বত্রই ধাপে ধাপে যে যার মতো মজুদ করে বাজারে একটি কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করছে। চালের দাম বেড়ে যাওয়ার এটাই মূল কারণ। যদিও ব্যবসায়ীরা এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু খোঁড়া অজুহাত সামনে টেনে আনছেন। তারা অজুহাত দেখাচ্ছেন আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বেশি। বর্তমানে সেটা ভারতের বাজারে ৫২০ মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। ভারতীয়রা বাংলাদেশে রফতানিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। রফতানি চাল বাজারে আনতে পরিবহন খরচ অনেক বেশি পড়ছে। দেশে ধান নেই। স্থানীয়ভাবে ধানের দামও বেশি। আগামী নভেম্বরের আগে দেশে ধানের ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
এর সঙ্গে একমত হতে পারেননি কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে জানান, দেশে এক কোটি টন চাল মজুদ আছে। ব্যবসায়ীরা মোটা চাল মেশিন দিয়ে কেটে মিনিকেট বানান।
তবে ব্যবসায়ীরা তার এ বক্তব্যেরও প্রতিবাদ করেন। এ প্রসঙ্গে চালকল মালিক চিত্ত রঞ্জন মজুমদার বলেন, ‘আপনার মতো একজন সিনিয়র মন্ত্রীর কাছে আমরা এ ধরনের বক্তব্য আশা করি না। কোথায় এক কোটি টন চাল মজুদ আছে, আমাদের দেখান।’ তিনি বলেন, ‘সরকার ভারত থেকে বেশি দামে চাল আমদানি করছে। কিন্তু আমাদের যদি দায়িত্ব দিত, তাহলে আমরা সরকারের চেয়ে কম দামে ভারত থেকে চাল এনে দিতে পারতাম।’
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত চালকল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন খাদ্যমন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ছাড়াও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান অর্থ মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. আবদুর রাজ্জাক এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কায়কোবাদ হোসেন বৈঠকে ছিলেন। ব্যবসায়ীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক পক্ষের সভাপতি আবদুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী, অপর গ্রুপের খোরশেদ আলম খান, বাংলাদেশ রাইস এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলম বাবু, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানসহ বিভিন্ন চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নেতারা। বৈঠকের শুরুতে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম দেশে চালের কোনো সংকট নেই এবং সারা দেশে প্রায় এক কোটি টন চাল আছে মন্তব্য করে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলেন। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে উল্টো সরকারের নানা নীতির সমস্যা ও সময়মতো সিদ্ধান্ত না নেয়ার কারণেই সংকট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন।
দিনাজপুরের জহুর অটোরাইস মিলের মালিক আবদুল হান্নান নিজেকে সরকারদলীয় সমর্থক পরিচয় দিয়ে বলেন, চালের আমদানি শুল্ক কমাতে গিয়ে অনেক সময় নেয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে কমানো হয়েছে। এসব কারণে দাম বেড়েছে। এরপর ব্যবসায়ীরা একে একে চালের দাম বাড়ার কারণগুলো তুলে ধরেন। একজন চাল ব্যবসায়ী বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুতে নির্ধারিত টোলের বাইরেও ট্রাকপ্রতি ২ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হয়। না দিলে ড্রাইভারকে মারধর বা ট্রাক ভাংচুর করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহনপুর ও বেনাপোলে হাজার হাজার চালের ট্রাক দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকে পার হতে পারে না। এ কারণে চালের দাম বৃদ্ধি পায়। এ সময় সরকারের মন্ত্রীরা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন ‘তাহলে ক্যামনে হবে’।
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি যখন খাদ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন ভারত থেকে চাল আমদানি করতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। মাত্র পাঁচ লাখ টন চাল আনার চুক্তি করেও কোনো চাল আনতে পারিনি। পরে ভিয়েতনাম থেকে চাল এনে সংকট মোকাবিলা করেছি।’ তিনি মোটা চাল কেটে মিনিকেট বানানোর বিষয়টিও নাকচ করেন। এ সময় ব্যবসায়ীরা তাকে সমর্থন জানান। ব্যবসায়ীদের চালের দাম কমানোর অনুরোধ জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার নিজেও আমদানি করে মজুদ বাড়াচ্ছে। আগামীকাল থেকে ৫০ লাখ মানুষকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেয়ার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি স্থগিত করেছি। আগামীকাল থেকে সারা দেশের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ওএমএস (খোলা বাজারে চাল বিক্রি) কর্মসূচি চালু করছি।’ আশা করি এতে চালের বাজারে প্রভাব পড়বে।
বৈঠকে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কেএম লায়েক আলী বলেন, ‘কাল থেকে চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা করে কমে যাবে।’
মিল মালিকদের কারসাজিকে দায়ী করে সরকারি হিসেবেই মোটা চালের দাম গত এক মাসে বেড়েছে ১৮ শতাংশ, এক বছরে বেড়েছে ৫০ শতাংশ। এখন বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনো মোটা চাল নেই। ধারাবাহিকভাবে চালের দাম বৃদ্ধির মধ্যে মজুদদারি বন্ধে প্রশাসন গত সপ্তাহে বিভিন্ন রাইস মিলে অভিযান শুরু করে। কুষ্টিয়ার খাজানগরে বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদের চালকলে অভিযান চালিয়ে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু রশিদকে জরিমানা করার পর এই কদিনে মিনিকেট চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ৪০০ টাকার মতো বাড়িয়ে দেয়া হয়। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অন্যান্য চালের দাম। এক পর্যায়ে চালকল মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভালো একটি বৈঠক হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যেই চালের দাম কমতে শুরু করবে।’
কেজিতে দু’টাকা করে চালের দাম কমালেন নবাব রাইস : রাজশাহী ব্যুরো জানায়, চলমান দামের ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের চালের কেজিতে দুই টাকা করে দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন দেশের অন্যতম চাল উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রসিদ্ধ মেসার্স নবাব ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড। মঙ্গলবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ে ৪ মন্ত্রী সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর নবাব ফুড প্রডাক্টসের স্বত্বাধিকারী ও নবাব রাইসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকবর হোসেন এই ঘোষণা দিয়েছেন।
দেশের অন্যতম চাল সরবরাহকারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আকবর হোসেন মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, দেশে চালের দামের ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ ও আহ্বানে সাড়া দিয়ে নবাব ব্র্যান্ডের সব ধরনের চালের কেজিতে দাম দুই টাকা করে কমানো হল। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই এই মূল্য কার্যকরে তিনি তার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জরুরি নির্দেশ দিয়েছেন। চালের বাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত নবাব রাইসের এই হ্রাসমূল্য অব্যাহত থাকবে।
আকবর হোসেন আরও জানান, দেশের স্থলবন্দরগুলোর বিপরীতে ভারতের বিভিন্ন বন্দরে প্রায় ৫ হাজারের বেশি ট্রাক চাল দেশে আসার অপেক্ষায় রয়েছে। স্থলবন্দরগুলো দিয়ে ভারত থেকে চাল আসতে দুই সপ্তাহ সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে মঙ্গলবারের বৈঠকে তিনি ভারত থেকে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ-রহনপুর রুটে ট্রেনযোগে চাল আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং এই প্রস্তাব উপস্থিত বাণিজ্যমন্ত্রীসহ কর্মকর্তারা গ্রহণ করেছেন এবং কাল থেকে ট্রেনযোগে ভারত থেকে চাল আসবে। এতে দ্রুত দেশে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছেন আকবর হোসেন। উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের বৃহৎ চাল উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নবাব রাইস দৈনিক ১০০ ট্রাক করে চাল দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করেন।