
জেলার সংবাদ
প্রেমের ফাঁদে যুবক খুন
ঢাকা, ২১ সেপ্টেম্বর,(ডেইলি টাইমস ২৪):
কুমিল্লায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে কামরুল হাসান খন্দকার নামের এক যুবককে নগরী থেকে দাওয়াত দিয়ে তিতাসে নিয়ে ৬ সেপ্টেম্বর রাতে দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর পাশে ট্রলারে উঠিয়ে খুন করে নদীতে ফেলা দেয়া হয়।
নিহত কামরুল জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার নেউরা সৈয়দপুর গ্রামের আবদুর রহমান খন্দকারের ছেলে এবং সে কুমিল্লা ক্লাবের কর্মচারী ছিল। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতারকৃত আল-মামুন ও তার স্ত্রী নার্গিস আক্তার বুধবার সন্ধ্যায় আদালতে এমনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।
এদিকে লাশের সন্ধানে দাউদকান্দি ও কোতোয়ালী থানা পুলিশ গত দুইদিন ধরে মেঘনা-গোমতী নদীতে তল্লাশি চালালেও বৃহস্পতিবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের লাশের খোঁজ মেলেনি।
পুলিশ ও আসামিদের জবানবন্দী সূত্রে জানা যায়, জেলার তিতাস উপজেলার ছোলাকান্দি গ্রামের মোশারফ হোসেন মুকুল মেম্বারের ছেলে আল-মামুনের (৩৫) নামে অস্ত্র, ডাকাতি, ছিনতাইসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় সে দীর্ঘ দিন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিল। আদালতে তার যেদিন হাজিরা থাকতো সেদিন তার স্ত্রী নার্গিস আক্তার (৩০) তাকে দেখতে আসতো। গত রমজান মাসে নার্গিস তার স্বামী আল-মামুনকে আদালতে দেখতে এসে কামরুল হাসান খন্দকারের (৩৫) সাথে পরিচয় হয়।
জবানবন্দী সূত্রে আরও জানা যায়, একপর্যায়ে কামরুল ও নার্গিস শহরের কান্দিরপাড়ে একটি হোটেলে বসে খাওয়া-দাওয়া করে এবং একে অপরের মোবাইল নম্বর নেয়। পরবর্তীতে তাদের মাঝে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। এদিকে নার্গিসকে দিয়ে প্রেমের ফাঁদ পেতে স্থানীয় একটি চক্র বিভিন্ন কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিতো। এ চক্রের আরও দুইজন হচ্ছে তিতাসের মেহেদী মামুন ও টুটুল।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কামরুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নার্গিস গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে তিতাসে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর কামরুল ঘরের ভেতর ঢোকার পরে সেখানে ওত পেতে থাকা মেহেদী মামুন ও টুটুল তাকে (কামরুল) চড়-থাপ্পড় মেরে টাকা দাবি করে। এতে কামরুল তার স্ত্রীকে ফোন করে টাকার জন্য বলে। তারপরও ওইদিন রাতে কামরুলকে বেদম মারধর করা হয়। পরে গভীর রাতে তারা কামরুলকে একটি ট্রলারে উঠায়। সেখানে পানি চাইলে কামরুলকে নদীর পানি খাওয়ানো হয়। এরপরই সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ট্রলারে করে তারা দাউদকান্দি ব্রিজ থেকে কিছুটা দক্ষিণে নিয়ে কামরুলকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। এর আগে কামরুল নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে তার স্ত্রী সালমা আক্তার কুমিল্লা কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি জিডি করেন।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, মোবাইল ট্র্যাকিং করে হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত আল-মামুন ও নার্গিস আক্তারকে দাউদকান্দি এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে বুধবার সন্ধ্যায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।