আন্তর্জাতিক

প্রথমবার কনসার্টে অংশ নিলেন সৌদি নারীরা

ঢাকা, ২৫ সেপ্টেম্বর,(ডেইলি টাইমস ২৪):

সৌদি আরবের জাতীয় দিবসে প্রথমবারের মতো কনসার্টে অংশ নিলেন দেশটির নারীরা। রক্ষণশীলতার দেয়াল টপকে উপভোগ করলেন কনসার্ট, লোকনৃত্য ও আতশবাজির ঝলকানি।

শনিবার সৌদি আরবের ৮৭তম প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী উপলক্ষে কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে আয়োজিত এসব অনুষ্ঠান উপভোগ করেন তারা। এর আগে স্টেডিয়ামটিতে খেলা এবং সব অনুষ্ঠানে নারীদের প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল।

রয়টার্স জানায়, এতদিন যে খেলার মাঠে কেবল পুরুষরাই যেতে পারত সেখানে প্রথমবারের মতো পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢুকে সাংস্কৃতিক আয়োজন ও নাটক উপভোগ করেন সৌদি নারীরা।

দেশটির প্রথা অনুযায়ী, পরিবারের পুরুষ সদস্য যেমন বাবা, ভাই কিংবা স্বামীর অনুমতি ছাড়া নারীরা পড়াশোনা, ভ্রমণ বা অন্য কোনো কার্যক্রম করতে পারেন না।

আগে খেলার মাঠেও তাদের ঢোকা বারণ ছিল। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রস্তাব করা অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নে সৌদি রাজতন্ত্র আগের কঠোর আইনগুলো শিথিলের চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে খেলার মাঠে নারীদের এই প্রবেশাধিকার।

প্রথমবারের মতো মাঠে বসে অনুষ্ঠান দেখতে উত্তর-পশ্চিমের জেলা তাবুক থেকে আসা উৎফুল্ল উম আবদুলরহমান বলেন, ‘আশা করছি অদূর ভবিষ্যতে মাঠে ঢুকতে আমাদের কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হবে না।’ পুরুষদের সমান সুযোগ থাকবে নারীদের- এমন প্রত্যাশা বহু বছর ধরে লালন করে আসার কথাও জানান তিনি।

রয়টার্স বলছে, খেলার মাঠে ঢোকা নারীদের মধ্যে দেখা গেছে বাঁধভাঙা উল্লাস, অনেকের হাতে ছিল সৌদি আরবের পতাকা, কেউ কেউ বোরকার সঙ্গে জড়িয়েছেন রঙিন পরচুলা। অনুষ্ঠানের উদ্দামতার সঙ্গে পুরো মাঠজুড়ে ছিল নারীদের আনন্দ চিৎকার।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেক সৌদি পুরুষ ‘ঐতিহাসিক’ এই মুহূর্তকে স্বাগত জানিয়েছেন; গেয়েছেন প্রশস্তির জয়গান। টুইটারে এক সৌদি পুরুষ মন্তব্য করেন, ‘মনে হচ্ছে নারীরাই সব টিকিট কিনে নিয়েছেন।’

কট্টর-রক্ষণশীল সৌদি আরবেই নারীদের জন্য সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। এটাই বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে নারীরা গাড়ি চালাতে পারেন না।

তবে সৌদি সরকার সামাজিক সংস্কারের যে কর্মসূচি নিয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে সরকারি চাকরিতে নারীদের উপস্থিতি বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বান্ধবীদের নিয়ে মাঠে আসা সুলতানারও তেমনটাই প্রত্যাশা।

তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো স্টেডিয়ামে এসেছি, মনে হচ্ছে যেন আমি সৌদি নাগরিকের চেয়েও বেশি কিছু। এখন আমি আমার দেশের যে কোনোখানে যেতে পারি।’

দুই গালে জাতীয় পতাকার সবুজ ও সাদা এঁকে সরব চিৎকারে সুলতানার মতো কয়েকশ’ নারী জানান দিচ্ছেন তাদের ‘কাঁচের দেয়াল’ ভাঙার অনুভূতি। স্বপ্ন তাদের আরও বড়। সুলতানা বলেন, ‘আল্লাহ চাইলে শিগগিরই হয়তো নারীরা গাড়ি চালানো বা ভ্রমণের মতো আরও বড়, আরও ভালো কিছুর অনুমতি পাবেন।’

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button