
আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জেল সুপারের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা
ঢাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর,(ডেইলি টাইমস ২৪):
জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া জামিননামায় অপহরণ মামলার এক আসামির কারামুক্তির ঘটনায় পালিয়ে যাওয়া আসামি মিজানুর রহমান ওরফে মিজান মাতুব্বরের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। জামিননামা যাচাই না করে কারামুক্তি দেওয়ার বিষয়ে কারণ দর্শানোর প্রেক্ষিতে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের জেষ্ঠ্য জেল সুপার মো. জাহাঙ্গীর কবির স্বশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন।
আজ সোমবার ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্বশরীরে হাজির হয়ে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার মামলায় ভুয়া জামিননামা দিয়ে পালিয়ে যাওয়া মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান ওরফে মিজান মাতব্বরের বিরুদ্ধে মামলায় চার্জ গঠন করেন। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এ ছাড়া জেলারের দাখিল কবা লিখিত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি গ্রহন করেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো আদেশ পাওয়া যায়নি।
আজ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেষ্ঠ্য জেল সুপার ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ৩০ আগস্ট সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের ৪৩০ নম্বর স্মারকমূলে আদালতের পত্রবাহক তৈয়বের মাধ্যমে আসামি মিজানের জামিনামা ও রিলিজ আদেশ পায় জেল কর্তৃপক্ষ। পরদিন তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। ওই ছাড়পত্রের কপিও ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি ফোরকান মিয়া বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল থেকে কোনো ছাড়পত্র কারাগারে যায়নি।
জামিনের ছাড়পত্র পেলে প্রথমেই কারা কর্তৃপক্ষের উচিৎ যাচাই করা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা করেনি। তাই এখন আদালত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।গত ১০ সেপ্টেম্বর মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য ধার্য তারিখে কারাগারে থাকা আট আসামির ৭ জনকে কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে পাঠায়। কিন্তু মামলার প্রধান আসামি মিজান মাতব্বরকে আদালতে হাজির না করায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলারকে স্বশরীরে হাজির হয়ে কারণ দর্শাতে বলেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে সংশ্লিষ্ট আদালত হতে ফোন দিয়ে মিজানকে আদালতে হাজির না করার বিষয়টি জানতে চাইলে তারা ওইদিন জানতে পারেন যে আদালত থেকে মিজানের জামিন হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১০ সেপ্টেম্বর মামলার অপর ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। অন্যরা হলেন, রেজাউল করিম, নজরুল ইসলাম, মশিউর রহমান মন্টু, আলীম হোসেন চন্দন, সজীব আহমেদ ওরফে কামাল উদ্দিন, আবদুল্লাহ আল মামুন ও ইকবাল হোসেন শুভ, জাহির উদ্দিন মোহাম্মাদ বসার, শেখ মো. অলিউল্লাহ, রেজা মৃধা ও কাওছার মৃধা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২মে মাসে ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন স্টাফ রোড এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচ হতে শিশু আবীরকে (৮) তাদের প্রাইভেটকার থেকে অপহরণকারীরা ছিনিয়ে নিয়ে মাইক্রোবাসে অপহরণ করে। এরপর অপহরণকারী ১০ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরবর্তীতে একাধিক ব্যাংকের হিসাবের মাধ্যমে ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং নগদ ২৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে অপহরণকারীরা শিশু আবীরকে ছেড়ে দেয়। পরে ওই ঘটনায় আবীরের মামা এনায়েত উল্লাহ বাদি হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করলে র্যাব ৫ আসামিকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে আসামি মিজান, রেজাউল ও নজরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ওই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশের পরিদর্শক কবির হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।