জেলার সংবাদ

নড়াইলে আওয়ামী লীগের দুপক্ষে সংঘর্ষ

ঢাকা,০২ অক্টোবর,(ডেইলি টাইমস ২৪):

নড়াইলের বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারটি বাড়ি ভাঙচুর ও তিনটি মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ  সম্পাদক আসাদুজ্জামানের মৃত্যুর পর শূন্য পদের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান আনিস সমর্থিত প্রার্থী উজ্জ্বল ও প্রতিপক্ষের আজিজুলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর  ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ও তার লোকজন প্রতিপক্ষের আজিজুল, ইদ্রিস শেখ, হিমু শেখ ও হামিদ শেখকে মির্জাপুর বাজারে মারধর করেন। ওই ঘটনার জের ধরে গতকাল রবিবার বিকেলে প্রতিপক্ষের লোকজন চেয়ারম্যান আনিসের সমর্থক জুয়েল শেখকে চাকই চৌরাস্তায় মারধর করে।খবর পেয়ে রাতেই বিছালী ও মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে প্রতিপক্ষের লোকদের সহযোগিতায় মফি মোল্লা নামের এক বৃদ্ধকে ধরে নিয়ে যায় এবং ইদ্রিস শেখ, হামিদ শেখ, হিমু বিশ্বাস ও আজিজুলের বাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় মির্জাপুর ফাঁড়ি ইনচার্জ (আইসি) শফিকের নেতৃত্বে তিন বাড়ি থেকে তিনটি মোটরসাইকেল তালা ভেঙে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

হিমু বিশ্বাসের স্ত্রী সালমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “রাতে বিছালী ফাঁড়ির আইসি (ইনচার্জ) এসআই খায়রুলের নেতৃত্বে ১৩-১৪ জন পুলিশ আমার বাড়ির ফ্রিজসহ সব মূল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে। পুলিশ জানমাল রক্ষা না করে ভাঙচুর করে- এটা আবার কোন দেশ? আমরাতো আওয়ামী লীগের সমর্থক। ”

আরেক অভিযোগকারী ইদ্রিস শেখের মেয়ে স্বর্ণালী বলে, “আমাদের বাড়িঘর তল্লাশি আর ভাঙচুর একই সঙ্গে করে এসআই খায়রুল ও তার লোকজন। তারা আমাদের ট্রাঙ্ক ভেঙে একটি প্যাকেটে রাখা ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এমনকি আমাদের রান্না করা চুলাও ভেঙে দিয়ে গেছে।

আমাদের রাত থেকে খাওয়া হয়নি। এলাকার গণ্ডগোল কিন্তু পুলিশ লুটপাট চালাবে এটা কোন বিচার?”আজিজুলের অভিযোগ, চেয়ারম্যান আনিস অর্থ দিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে পুলিশ পাহারায় এলাকায় চলাফেরা করছিলেন। এখন আবার পুলিশ ম্যানেজ করে পুলিশকে দিয়ে আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর এবং লুটপাট করিয়েছেন। কোনও মামলা ছাড়াই পুলিশ আমাদের পক্ষের লোকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ”

বিছালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খায়রুলের সঙ্গে ভাঙচুর বিষয়ে কথা বললে তিনি ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ওটা আমার জুরিডিকশনের মধ্য পড়ে না, তাছাড়া ওখানে আরও অনেক অফিসারই গেছিলেন, আমার নাম কেন উঠল বুঝতে পারলাম না। ”  তিনি বলেন, “এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ কিছু মহড়া দিয়েছে। তা না হলে এতক্ষণে অনেক বড় গণ্ডগোল লেগে যেত। ”

মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শফিক তিনটি মোটরসাইকেল আনা প্রসঙ্গে বলেন, “তালা ভেঙে আনা হয়নি। ওই  অবস্থায় ভ্যানে করে আনা হয়েছে। ”

বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ঘটনাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদকে কেন্দ্র করে ঘটেছে বলে স্বীকার করেন, তবে ভাঙচুর ও লুটপাটের ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি। তিনি বলেন গতকাল রবিবার আজিজুলের লোকজন একজন নিরীহ ছেলেকে মেরেছে।

এলাকায়  দুই পক্ষের গণ্ডগোল এবং বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা স্বীকার করে নড়াইল সদর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, “এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ”  ভাঙচুর ও লুটপাটের সঙ্গে পুলিশের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন এই কর্মকর্তা।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button