
বৈঠক ভাওতাবাজি, আইওয়াশ
ঢাকা,০৩ অক্টোবর,(ডেইলি টাইমস ২৪):
রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে হওয়া বৈঠকে ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের যে চুক্তির কথা বলা হচ্ছে সেটিকে ‘ভাওতাবাজি’ বলছে বিএনপি।
বৈঠককে ‘আইওয়াশ’ অভিহিত করে দলটি বলছে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন একটি সুদীর্ঘ বিলম্বিত পথ। রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তাসহ স্বদেশে ফেরত নেওয়ার কোনো তাগিদ নেই সেখানে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানী নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের এই বক্তব্য তুলে ধরেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, ‘মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের চুক্তিতে মিয়ানমার সম্মত হয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে এ ধরনের চুক্তি ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।’
‘মিয়ানমারের মন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের সময়ও সেখানে রোঙ্গিাদের ওপর বর্বর নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। তাদের নির্যাতনে সেখান থেকে এখনো হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে আসছেন। সোমবার বিকালে হোয়াইক্যং উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে ১০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছেন। এ ছাড়া টেকনাফের নাইট্যংপাড়া ও শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্ট দিয়েও রোহিঙ্গা প্রবেশ করছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুই বলেননি।’
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে ঢাকা দুই দেশের পররাষ্ট্র পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠকে সোমবার এই সিদ্ধান্ত হয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির দপ্তরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে এবং সেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছে মিয়ানমার।
এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সার্বিক তত্ত্বাবধানে দুই দেশ একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা উভয়ে সম্মত হয়েছি। এই জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের কম্পোজিশন কী হবে-সেটা আমরা বাংলাদেশও ঠিক করব, ওরাও ঠিক করবে। সম্মতিটা হয়েছে এই আলোচনায়।’
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশবাসীকে মন ভোলানো কথা বলেছেন। বৈঠকটি আইওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন একটি সুদীর্ঘ বিলম্বিত পথ। রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তাসহ স্বদেশে ফেরত নেওয়ার কোনো তাগিদ নেই সেখানে।’