
ধর্ষকের সঙ্গেই স্কুলে ক্লাস করতে বাধ্য হয়েছিল মেয়েটি
ঢাকা, ০৯ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
যুক্তরাজ্যে একটি বিদ্যালয়ে সহপাঠীর কাছে ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর সেই ধর্ষক সহপাঠীর সাথে বসেই ক্লাস করতে হচ্ছে এক কিশোরীকে। ধর্ষণের ঘটনার পর পুলিশ ধর্ষককে আটক করলেও আদালতের মাধ্যেমে জামিনে ছাড়া পেয়ে সে এসে ক্লাসে যোগ দেয়। ধর্ষণের ঘটনাটি সবাই জেনে যাওয়ার পরও ধর্ষকের সঙ্গে বসে ক্লাস করার ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে মেয়েটি।
বিবিসি’র ভিক্টোরিয়া ডার্বিশায়ার অনুষ্ঠানে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির মা রেইচল (ছদ্মনাম) জানান, যে ধর্ষণের শিকার হয়, সে এমনিতেই খুব নাজুক মানসিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায়। তারপরও যদি নিজের ধর্ষকের সঙ্গে বসে ক্লাস করতে হয়, তবে তা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বরং এটি ওই মেয়েটির ওপর খুবই অন্যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ের জন্য বিষয়টি আরও কষ্টের, কারণ ধর্ষণের ঘটনা সহপাঠীরা জেনে গেছে। তারাও আপনাকে আপনার ধর্ষকের সঙ্গে একসাথে দেখছে, যাচাই করছে, এটা খুব ভয়ংকর একটা ব্যাপার।’
ওই ঘটনার পর রেইচল বহু চেষ্টার পর স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায় বসতে সক্ষম হন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ছেলেটি পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী। স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে মেয়েটি ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেয় এবং স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দেয়।
এদিকে ধর্ষণের পর যেন ধর্ষকের সাথে বসে ক্লাস না করতে হয়, সেজন্য একটি বিশেষ নীতিমালা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকার। তবে অভিযোগ উঠেছে, ওই নীতিমালা তৈরির ক্ষেত্রে খুব কালক্ষেপণ করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটি সামনে আসে ২০১৬ সালে কমনস উইমেন অ্যান্ড ইক্যুয়ালিটিস কমিটিতে। ওই সম্মেলনে ইংল্যান্ডের স্কুলগুলোতে যৌন সহিংসতার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। বিবিসি’র এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বিগত তিন বছরে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে যৌন হয়রানির ঘটনায় সাড়ে পাঁচ হাজার মামলা করা হয়েছে।
যৌন সহিংসতার বিষয়ে স্কুলগুলো মেয়েদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে করেন ‘ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন’-এর সহ-পরিচালক রেইচল ক্রাইস। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকারে উচিত স্কুলগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ঠিক করে দেওয়া।
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের শিশু ও পরিবার বিষয়ক মন্ত্রী রবার্ট গুডউইল বলেন, নিঃসন্দেহে সহপাঠীদের দ্বারা নির্যাতনের ক্ষেত্রে স্কুলগুলোতে শিশুদের সুরক্ষা বিষয়ক সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা উচিত। এক্ষেত্রে স্কুলগুলোকে সহায়তা করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অংশীদার আর বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার মাধ্যমে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
সূত্র: বিবিসি বাংলা