
তুরস্ক ও আমেরিকার বিবাদের জেরে ভিসা দেয়া বন্ধ
ঢাকা, ০৯ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
তুরস্ক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর মধ্যে এক কূটনৈতিক বিবাদের প্রতিক্রিয়ায় উভয় পক্ষই একে অপরের দেশের দূতাবাস থেকে ভিসা দেয়া পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ করে দিয়েছে।
আংকারায় আমেরিকার মিশন বলেছে, তাদের কর্মচারীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তুরস্কের আন্তরিকতা পুনর্বিবেচনা করার জন্য তারা সব রকম নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা দেয়া স্থগিত করেছে।
এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ওয়াশিংটনে তুরস্কের দূতাবাস ‘সব রকম ভিসা দেয়া’ স্থগিত করেছে।
এই বিবাদের সূচনা হয় ক’দিন আগে, যখন ইস্তাম্বুলে মার্কিন কনস্যুলেটের একজন কর্মীকে বিতর্কিত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লা গুলেনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে আটক করা হয়।
গত বছর তুরস্কে যে ব্যর্থ অভ্যুত্থান হয়েছিল তার পেছনে আমেরিকা-প্রবাসী ফেতুল্লা গুলেনের ভূমিকা আছে বলে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে থাকে।
ইস্তাম্বুলে মার্কিন কনস্যুলেটের একজন কর্মকর্তাকে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের চেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।
তুর্কী সরকার বলছে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রকারী এবং তাদেরকে যারা সমর্থন দিয়েছিল সেই নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে তারা কাজ করছে।
মাত্র দু’সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তুরস্ক ও অ্যামেরিকার মধ্যে সম্পর্ককে ‘এযাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
এই যুক্তরাষ্ট্রই এখন তুরস্কে তাদের কূটনৈতিক মিশনগুলোতে ভিসা দেওয়া আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। পরে একই কাজ করেছে তুরস্কও।
এই কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব পড়েছে তুর্কী শেয়ার বাজারের ওপর। দেশটির শেয়ার সূচক পড়ে গেছে চার শতাংশ। ডলারের বিপরীতে তুর্কী মুদ্রা লিরার দাম পড়েছে আড়াই শতাংশ।
এর আগেও কূটনৈতিক বিরোধের প্রেক্ষিতে অন্য দেশের নাগরিককে জিম্মি হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে তুরস্কের বিরুদ্ধে। বছরখানেক আগে একজন অ্যামেরিকান যাজককেও আটক করা হয়।
আঙ্কারার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে ফেরত পাঠাতে হবে।
ওই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় তিনিই ছিলেন মূল হোতা। কয়েকজন জার্মান নাগরিকও এখন তুরস্কে আটক।
তুরস্ক বলছে, জার্মানিতে আশ্রয় নেওয়া তুর্কী নাগরিকদেরকে তাদের কাছে ফেরত পাঠাতে হবে। তুরস্কে ভ্রমণের ব্যাপারে জার্মানি তার নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে।
তুরস্ক থেকে বিবিসির সংবাদদাতা মার্ক লোয়েন বলছেন, ওয়াশিংটনও এখন সেই একই সতর্কতা জারি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
– বিবিসি বাংলা