আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একাট্টা সবাই

ঢাকা, ১৪ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):

ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নিতে যাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে খুব শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং এ ব্যাপারে নতুন ‘আগ্রাসী কৌশল’ ঘোষণা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

বিবিসি জানায়, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেবে না। তবে পরমাণু চুক্তি থেকে বের যাওয়া ও ইরানের ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপ করা হবে কি না, সে বিষয়ে ৬০ দিনের মধ্যে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত চাওয়া হবে। ইতিমধ্যে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়ার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

পরমাণু চুক্তি থেকে ট্রাম্পের বের হয়ে যাওয়ার প্রশ্নে তার ওপর আগে থেকেই আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ চাপ ও সমালোচনা রয়েছে।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, চুক্তি থেকে ট্রাম্প তাদের সমর্থন তুলে নিলে দেশটির পার্লামেন্ট কংগ্রেস ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করতে ৬০ দিন সময় পাবে। তারপর প্রেসিডেন্টের অনুমোদনক্রমে ফের ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে ওয়াশিংটন।

তেহরান পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করবে এবং কোনো মারণাস্ত্র প্রস্তুতে ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ করবে না, এমন বেশ কিছু শর্তে তাদের ওপর থেকে পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অঙ্গীকার সংবলিত চুক্তিটি গত ২০১৫ সালের জুলাইয়ে সই হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সেই চুক্তিতে ছিল জাতিসংঘের বাকি চার স্থায়ী সদস্য যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া এবং জার্মানি এই ছয় বিশ্বশক্তি।

এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ‘পরমাণু সমঝোতা চুক্তি’ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোসহ বাদবাকি সব সরকারের জন্য বিরাট পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার ওপর একটি সরকারের প্রতি বিশ্ববাসীর আস্থার বিষয়টি নির্ভর করে। পরমাণু সমঝোতার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে যাচ্ছেন তখন তার আগ মুহূর্তে ইরানের প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, যারা এই চুক্তির প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছে, তারা নিজেদের আত্মসম্মানবোধ বজায় রেখেছে।

এদিকে পরমাণু সমঝোতা চুক্তি ইরান পুরোপুরি মেনে চলছে বলে আবারও প্রশংসা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ) এবং রাশিয়া। সেই সঙ্গে সমঝোতার অন্যান্য পক্ষকে তা মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছে তারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমা গেব্রিয়াল ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে যথাক্রমে বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার সকালে টেলিফোনে আলাপ করেন।

এ সময় দুই কর্মকর্তা বলেন, পরমাণু সমঝোতার প্রতি ইরান অবিচল রয়েছে। তারা আরও বলেন, যতদিন ইরান এ সমঝোতার ধারার প্রতি সম্মান দেখাবে ইউরোপও তা অব্যাহত রাখবে।

এছাড়া সমঝোতার বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, সমঝোতা থেকে আর্থিক সুবিধা তুলে নেয়ার সুযোগ ইরানকে দেয়া উচিত।

এছাড়া সমঝোতার ধারা এবং একে ঘিরে সৃষ্ট নানা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন। রাশিয়ার সংবাদ ইতার-তাস জানায়, টেলিফোনালাপে টিলারসনকে লাভরভ বলেন, পরমাণু সমঝোতার প্রতি ইরান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।

ফলে অন্য পক্ষকেও এ সমঝোতার প্রতি অবিচল থাকতে হবে। এছাড়া পরমাণু সমঝোতা থেকে সরে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকার জন্য কোনো আইনি ভিত্তি আছে কিনা সে ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেন লাভরভ। এদিকে পরমাণু চুক্তি মেনে চলতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরকারী চীন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।

Show More

আরো সংবাদ...

Back to top button