
ব্যথার কারণ নির্ণয়
ঢাকা, ১৭ অক্টোবর, (ডেইলি টাইমস ২৪):
ব্যথা কোনো রোগ নয়, এটি রোগের উপসর্গ মাত্র। যখন শরীরের কোথাও আঘাতপ্রাপ্ত হয় বা রোগাক্রান্ত হয়, তখনই আমরা ব্যথা অনুভব করি। ব্যথা বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। যেমন-
মাংসপেশি ও অস্থি সংক্রান্ত ব্যথা
চলার পথে কোনো চোট বা আঘাত পেলে সঙ্গে সঙ্গে জায়গাটি ফুলে যায়, গরম হয়ে যায়, ব্যথা অনুভব করি। যে কোনো মাংসপেশি ও অস্থিতে ব্যথা হতে পারে, এ ব্যথাকে মাস্কুলোস্কেলিটাল পেইন বলা হয়।
নার্ভ বা স্নায়ুজনিত ব্যথা
নার্ভের আঘাত বা নার্ভের ওপর চাপ থেকে ব্যথা হয়। মেরুদণ্ডের কশেরুকার মধ্যবর্তী স্থান থেকে স্পাইনাল নার্ভগুলো রুট অনুযায়ী হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন দিকে যায়। কোনো কারণে যদি এই নার্ভের উপর চাপ লেগে যায় সে ক্ষেত্রে ব্যথা অনুভূত হয়, তখন এই জাতীয় ব্যথাকে নিউরোলজিক্যাল পেইন বা স্নায়ুজনিত ব্যথা বলা হয়। যে সব রোগে উপরোক্ত সমস্যা দেখা যায় তার মধ্যে লাম্বাগো সায়টিকা, পিএলআইডি বা ডিক্স প্রলেপস অন্যতম।
বাত ব্যথা
কিছু কিছু রোগ আছে যেগুলোকে অটো-ইম্যুইন ডিজিজ বলে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বাইরে অর্থাৎ আমাদের শরীরে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি হয় যা এই রোগগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারে না। যেমন- রিউমাটয়েড আর্থাইটিস, অ্যানকাইলেজিং স্পনডাইলাইটিস, স্পনডাইলো-আর্থোপ্যাথি ইত্যাদি। এই রোগগুলোতে হাত ও পায়ের বিভিন্ন জয়েন্ট আক্রান্ত হয়, ব্যথা করে। অনেক ক্ষেত্রে জয়েন্ট ফুলে যায়। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠার সময় বেশি ব্যথা করে।
বয়সজনিত হাড়ের ক্ষয় থেকে ব্যথা
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেমন আমাদের চুল পেকে যায় তেমনি হাড়েরও ক্ষয় হতে থাকে। মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয় হলে এটাকে স্পনডাইলোসিস বলে। যেমন- সারভাইক্যাল বা লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস, তেমনি জয়েন্টের ক্ষয়জনিত কারণে যে রোগ হয় তাকে অষ্টিওআর্থাইটিস বলা হয়। হাঁড় যখন ভঙ্গুর হয়ে যায় বা হাঁড়ের ডেনসিটি কমে যায় তখন এই সমস্যাকে অষ্টিওপোরোসিস বলে।
রোগ সংক্রান্ত ব্যথা
শরীরে কোনো একটি জীবাণু সংক্রমণের কারণে ব্যথা হয় যেমন- টিউমার, ক্যান্সার, টিবি বা যক্ষ্মা রোগ ইত্যাদি।
রেফার্ড পেইন বা স্থানান্তরিত ব্যথা
এ ধরনের ব্যথা মারাত্মক। রোগীর সমস্যা এক জায়গায় কিন্তু উপসর্গ দেখা দেয় অন্য জায়গায়। যেমন- একজন ব্যক্তির হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে ব্যথা, বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে কিংবা হাঁটতে পারে না। খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিলে ব্যথা কমে যায়। এ ক্ষেত্রে ব্যথার কারণ অনুভব করছে পায়ে, তেমনিভাবে রোগীর সমস্যা ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করছে হাতে। আবার সমস্যা কিডনিতে রোগী ব্যথা অনুভব করছে কোমরে।
তাই এই ব্যথাকে অবহেলা নয়! কী কারণে ব্যথা হচ্ছে নির্ণয় করা জরুরি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে।