
আওয়ামী লীগের প্রশংসায় সিইসি
সংলাপে বসে আওয়ামী লীগের ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘দেশের সব অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনও আওয়ামী লীগের আমলে ব্যাপক স্বাধীনতা পেয়েছে।’
১৮ অক্টোবর বুধবার বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সংলাপে বসে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ নের্তৃবৃন্দের সঙ্গে ইসি এ সংলাপে বসে।
সিইসি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী দল। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, ইয়ার আহমেদ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মত নিবেদিত নেতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বায়ান্ন সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলণ, সত্তরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বহু অর্জন, বহুমুখী, গণমুখী সকল আন্দোলন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ফসল। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আহবান ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ স্বাধীন করেছে জাতি।
সিইসি বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে দেশ গড়ার উদ্যোগ নেন। সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশকে পুনর্গঠনে এক বছরের কম সময়ের মধ্যে একটি সংবিধান উপহার দেন। নির্বাচন কমিশন গঠন করেন এবং ১৯৭৩ সালে প্রথম নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদীয় সরকার উপহার দেন জাতিকে। ১৯৭৪ এর মধ্যে জাতীয় প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে যায়।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে সিইসি বলেন, জাতির জনককে সপরিবারের হত্যা ও জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যার পরে আওয়ামী লীগকে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। ১৯৮১ সালে প্রথমবারের মতো দলটির সভাপতি নির্বাচিত হয়ে বহু বাধা বিপত্তি, প্রতিকূলতা, ভয়ঙ্কর সব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দলকে সুদৃঢ় অবস্থানে নিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে তিন দফা সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার উদ্যোগেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়, রায় কার্যকর করা হয়। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কূটনৈতিক সমাধান অর্জনের মধ্যে দিয়ে তিনি ‘বিশ্ব মাতৃকার আসনে সমাসীন’ হয়েছেন।
সিইসি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নের প্রতিটি খাতে, শিক্ষা, সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার, পরিবেশ সংরক্ষণে আজ বিশ্ব ধরিত্রীর মুকুট প্রধানমন্ত্রীর মাথায়। দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছেন তিনি।
সেসময় নির্বাচন কমিশনের সামনে এগিয়ে যেতে ও সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সুপারিশ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিইসি নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ভিন্ন পরিস্থিতিতে ইসির দায়িত্ব পালনে আপনাদের পরামর্শ, সুপারিশ ও সহযোগিতা পেতেই আজকের এ সংলাপ আয়োজন ও প্রয়োজন।
এর আগে ১৫ অক্টোবর রোববার বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপের দিকে জাতি তাকিয়ে আছে বলে মন্তব্য করে দলটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘তার নেতৃত্বে বিএনপি গঠিত হলে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি হিসেবে, দলনেতা হিসেবে তিনি ছয় বছর রাষ্ট্রপরিচালনা করেছেন।’
ওই বক্তব্যের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার পদত্যাগ দাবি করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। পাশাপাশি গত ১৬ অক্টোবর সোমবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপও বয়কট করে দলটি।