
পর্যটন শিল্পকে রক্ষা করতে এ খাতের সাথে জড়িতদের সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন
একান্ত সাক্ষাৎকারে সিআইএস-বিসিসিআইয়ের কো-চেয়ারম্যান এইচ এম সাঈফ আলী খান
ডেইলি টাইমস ২৪: বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্প। করোনার প্রভাবে বাংলাদেশের পর্যটন খাতের সাথে জড়িতরা যে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে তা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এই অবস্থা থেকে পর্যটন শিল্পকে রক্ষা করতে এই শিল্পের সাথে যারা জড়িত তাদের সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন এবং পর্যটন বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা আবশ্যক, কারন এ থেকে আমরা বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো বলে জানিয়েছেন কমনওয়েলথ ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটস-চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইএস-বিসিসিআইয়ের কো-চেয়ারম্যান ও গ্লোবাল এক্সপ্লোর প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচ এম সাঈফ আলী খান। পর্যটন শিল্পের বর্তমান অবস্থান, বাংলাদেশে এই শিল্পর সম্ভাবনা ও করণীয় বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।
এইচ এম সাঈফ আলী খান বলেন, সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প করোনার বিপর্যয় এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অন্যান্য শিল্প যেমন করোনাকালীন সরকারের যে প্রণোদনা পেয়েছে পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িতরা সেই সুবিধা পাইনি। তাছাড়া পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িতা কোনো ব্যাংক ঋণের সুবিধাও পায় না। ফলে দেশে প্রায় ৪০-৫০ ভাগ ট্রাভেল এজেন্সি এবং ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। সেই সাথে বেকার হয়েছে লাখ লাখ কর্মী। এখনো যারা টিকে আছে তারা ঋণ করে কোনো মতে টিকে আছে। এই অবস্থায় এই শিল্পকে বাঁচাতে হলে এর সাথে সরাসরি যারা জড়িত তাদের সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনার বিষয়ে এইচ এম সাঈফ আলী খান বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে পর্যটন খাত হতে পারে অন্যতম। নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপসহ বিশে^র অনেক দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত হচ্ছে পর্যটন শিল্প। বাংলাদেশে কক্সবাজারে রয়েছে বিশে^র সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত। বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ির বগালেকের পাহাড়ের সৌন্দর্যের মতো সিলেটের প্রকৃতিক সৌন্দর্যে যে কেউই মুগ্ধ হবে। আমাদের রয়েছে সুন্দরবনের মতো বিশে^র সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন, তাছাড়া বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কতো ঐতিহ্য। আমরা যদি সঠিকভাবে বাংলাদেশের এই অপার সৌন্দর্যকে বিশে^র কাছে তুলে ধরতে পারি তাহলে যে বৈদেশিক মুদ্রা আসবে তা আমাদের রেমিটেন্স বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
এইচ এম সাঈফ আলী খান বলেন, গত ১২ জুন রাশিয়া সরকারের আমন্ত্রণে সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেখানে রাশিয়ার বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নরদের সাথে বৈঠক করেন তিনি। তারা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, বাইসাইকেল, চামড়া পণ্য, গামেন্টস পণ্য এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে দক্ষ মানব সম্পদ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা তাদের বাংলাদেশে ভ্রমণে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং বাংলাদেশের সাথে পর্যটন শিল্পে কাজ করার জন্য আহবান জানিয়েছি। রাশিয়া থেকে বড় একটি পর্যটন দল বাংলাদেশে ভ্রমণ করবে বলে তারা আমাদের জানিয়েছেন। এই অবস্থায় আমরা যদি রাশিয়া থেকে ভ্রমণকারী দলটিকে সঠিকভাবে আতিথেয়তা করতে পারি এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে সঠিকভাবে তথ্য প্রদান ও তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি তাহলে আমার বিশ^াস রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে অনেক পর্যটন আমরা টানতে পারবো, যাতে করে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম একটি খাত হতে উঠবে পর্যটন শিল্প।